পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১১ নভেম্বর। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। ভোটারদের পক্ষে টানতে চলছে উঠান বৈঠক, পথসভাসহ নানা কার্যক্রম। এদিকে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাপটে ক্রমেই কোনঠাসা হয়ে পড়ছে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থীরা।
এ অবস্থা সামাল দিতে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব কাজী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক ভিপি আবদুল মান্নানসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা পানপট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল কালামের পক্ষে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় উপস্থিত ভোটারদের নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। শুক্রবারের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচন থেকে সরে না আসলে তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো, হুশিয়ারী চিঠি, বহিষ্কারসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের। তৃণমূল কাউন্সিলে সর্বোচ্চ ভোট পেলেও দলের মনোনয়ন না পেয়ে এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে জোর কদমে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন মো. মাসুদ রানা।
এছাড়া কলাগাছিয়া ইউপিতে মাইনুল সিকদার তৃণমূলের কাউন্সিলে সর্বোচ্চ ভোট পেলেও দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় নজরুল ইসলাম দুলাল চৌধুরীকে। এ কারণে বিদ্রোহী প্রাথী হয়ে লড়ছেন মাইনুল সিকদার।
বকুলবাড়িয়া ইউপিতে শহিদুল ইসলাম তৃণমূলের কাউন্সিলে সর্বোচ্চ ভোট পেলেও দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় বর্তমান চেয়ারম্যান আবু জাফর খানকে। এ অবস্থায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন শহিদুল ইসলাম।
গজালিয়া ইউপিতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের ভাই খালিদুল ইসলাম তৃণমূলে কাউন্সিলের সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছিলেন। দলের মনোনয়নও তাকে দেয়া হয়। এ ইউপিতে নির্বাচনে বিদ্রোহী হিসাবে লড়ছেন বরিশাল ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রলীগের নেতা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস। তিনি ১৯৭১ সালে চিকনিকান্দি ইউনিয়নের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হালিম বিশ্বাসের ছেলে।
ডাকুয়া ইউপিতে বিশ্বজিৎ রায় তৃণমূলের কাউন্সিলে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে দলীয় মনোনয়ন পেলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন এ্যাড. মামুন খান। তিনি গলাচিপা উপজেলা যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক।
গলাচিপা সদর ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন টুটু। এ ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাদির সাথে।
সবচেয়ে বেশি বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি রয়েছে চরকাজল ইউনিয়নে। এ ইউপিতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ে তৃণমূলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি। অত্যন্ত গোপনে উপজেলা আওয়ামী লীগ কাউন্সিল দেখিয়ে ৩ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠান। মনোনয়ন দেয়া হয় বর্তমান চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রুবেলকে। এ কারণে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিনের বাবা চরকাজল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান মোল্লা, আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন গাজী বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।
চরবিশ্বাস ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন বাবুল মুন্সী মনোনয়ন পেলেও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হিসাবে নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. রাজা মিয়া।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল