পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে পরীক্ষা নিরিক্ষা ছাড়াই অসুস্থ, রোগা, খাবার অনুপযোগী পশু জবাই করে বিক্রি করছে এক শ্রেনির অসাধু মাংস ব্যবসায়ী। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই যেখানে-সেখানে এসব পশু জবাই করা হচ্ছে। অসুস্থ পশুর মাংশ খেয়ে সাধারণ মানুষ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পরিবেশেরও নানা ক্ষতি হচ্ছে।
জেলা শহরসহ এবং বিভিন্ন হাট বাজারে স্বাস্থ্য পরির্দশকের ছাড়পত্র গ্রহণ করে ধর্মীয় রীতি অনুসরণ করে পশু জবাইয়ের সরকারী বিধান থাকলেও এসব মানা হচ্ছে না কোথাও। মাংস ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন হাট বাজার থেকে কমদামে অসুস্থ এবং খাবার অনুপযোগী পশু কিনে নিজেদের বাড়িতে অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঝুপড়ি ঘরে জবাই করে বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরায় সরবরাহ করছেন। পাশাপাশি দোকান থেকেও বিক্রি করছেন।
পঞ্চগড় জেলা শহরের পিলখানায় বৈধ নিয়মে প্রতিদিন জবাই হয় ১০ থেকে ১৫টি পশু। অথচ শহরের বিভিন্ন স্থানে জবাইকরা পশুর সংখ্যা ৫০টিরও বেশি। সারা জেলায় প্রতিদিন অন্তত হাজার খানেক পশু জবাই করা হয়।
পঞ্চগড় পৌরসভা নির্ধারিত পশু জবাইয়ের স্থান পিলখানায় একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও একজন মাওলানাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও জবাই করার জন্য নিয়োগ করা থাকলেও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই পশু জবাই করা হয়। জবাই করা পশুর রক্ত এবং উচ্ছিষ্ট নিয়ে চলে কুকুরের টানাটানি। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পশু জবাই এবং বিক্রির কোন পরিবেশ নেই মাংসের দোকান গুলোতে।
পঞ্চগড় পৌর সভার পিলখানার দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রতিদিন ভোর বেলায় পৌর সভার নির্ধারিত পিলখানায় জবাই এর আগে প্রতিটি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তার সনদপত্র ব্যবসায়ীর হাতে দেয়া হয়। পিলখানার বাইরে গোপনে কেউ পশু জবাই করলে আমাদের কিছুই করার থাকে না। তারপরেও আমরা বিষয়টি মনিটরিং করে থাকি।
জেলা শহরের ইসলামবাগ এলাকার ভোক্তা রফিকুল ইসলাম জানায়, মাংসের বাজারে অনেক আগে থেকেই এসব কারবার চলছে। ভাল মাংসের সাথে খারাপ মাংশ মিশিয়ে পরিমাপে কম দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষ সঠিক মূল্য পরিশোধ করেও ঠকে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে প্রশাসনের নেই কোন মনিটরিং।
এছাড়াও জেলা শহরের হাট বাজারগুলোতে যে পরিবেশে মাংশ বিক্রি হয় তা আদৌও স্বাস্থ্য সন্মত উপায়ে হয় না।
শহরের কায়েত পাড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, পশুর মাংস বিক্রির জন্য একটি নির্ধারিত জায়গা ঠিক করে দেয়া উচিৎ। বিচ্ছিন্নভাবে মাংস বিক্রি করার কারনে এই সব বিড়ম্বনার স্বীকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আবুল কালাম জানায়, সুস্থ পশুর মাংস না খেলে মানুষ যক্ষ্মাসহ নানা পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হতে পারে। এ বিষয়ে সকলের সর্তক থাকার পরামর্শ তার।
পঞ্চগড় পৌর সভার মেয়র জাকিয়া খাতুন বলেন, শহরের হাট বাজারগুলোতে খাদ্য দ্রব্য বিপনন ও সরবরাহের জায়গাগুলো যেন স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিচালিত হয়, সে বিষয়ে কঠোর মনিটরিং শুরু করা হয়েছে। পরিমাপে কম এবং ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ