পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের বারান্দায় ইউএনও প্রশাসনিক কর্মকর্তার কক্ষের সামনে মারামারির এ ঘটনা ঘটে। মারামারি করা দুই চেয়ারম্যান হলেন-উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কনকদিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার (৬০)। অপরজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও দাসপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান এএনএম জাহাঙ্গীর হোসেন (৬২)। দুজনেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ও ইউএনও কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কনকদিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ইউএনও’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নূরুল হকের কক্ষে বসে কথা বলছিলেন। এসময় দাসপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন ওই কক্ষের সামনে দিয়ে ইউএনওর কক্ষের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন জাহাঙ্গীর হোসেন শাহিন হাওলাদারকে সালাম দেন। শাহিন হাওলাদার তাকে (জাহাঙ্গীর) বলেন ও শালা যাও কই? উত্তরে জাহাঙ্গীর বলেন দুলাভাই সামনে যাই। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে জাহাঙ্গীরকে বলেন আমি তোর কেমন দুলাভাই, এই বলে জাহাঙ্গীরকে চর-থাপ্পর মারেন শাহিন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ইউএনও বের হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ অবস্থান নেয়।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘আমি ইউএনও স্যারের কক্ষের পাশে একটি কক্ষে বসেছিলাম। ওই সময় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং আমাকে উদ্দেশ করে তার এক কর্মীর সঙ্গে বলেন, ওই দেহি শালায়। এরপর আমি এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাই। তখন কথা-কাটাকাটি হয়েছে। মারামারির ঘটনা সত্য নয়।
ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমি তাকে (শাহিন) উদ্দেশ করে কোনো কথা বলিনি। আমিও চেয়ারম্যান, তিনিও (শাহিন) চেয়ারম্যান। চোখে চোখ পড়ায় সালাম দেই। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ওপর হামলা চালায় এবং আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। ইউএনও না থাকলে হয়তো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতো। সিসি ক্যামেরা দেখলেই বোঝা যাবে, তিনি (শাহিন) কতটা ভয়ঙ্কর ছিলেন।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষ শিখবে। সেখানে দুইজন চেয়ারম্যানের এরকম আচরণ খুবই দুঃখজনক। প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি। চিৎকার শুনে অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে দুই চেয়ারম্যানকে দুদিকে সরিয়ে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছি। বিষয়টি সাথে সাথে জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই