কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার ওই যুবক বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অভিযোগ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট করায় তাকে গাছের সাথে বেঁধে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। তবে পুলিশ ও স্থানীয়দের দাবি পাওনা টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে পিতাও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। গত রোববার (১৪ নভেম্বর) সকালে ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর বাজারে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার লিটন আলী (৩৬) নামের ওই যুবক ও তাঁর পিতা নবীর উদ্দিন (৬৫) বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লিটন জানান, তিনি জুনিয়াদহ ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জাপুর মালিথা পাড়ার বাসিন্দা। তিনি নিজেও গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ওই ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাহেদ আহমেদ শওকতের নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেন।
লিটনের দাবি, নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় জুনিয়াদহ ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থী হাসানুজ্জামান হাসানের লোকজন তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন চালায়। ওই দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার মাছের খামার দামুসী বিল থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে মির্জাপুর বাজারে একটি গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। এ সময় ১০-১৫ জন তাকে বেদম মারধর করে। এ সময় তার বাবা নবীর উদ্দিন তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করা হয়।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহেদ আহমেদ শওকত জানান, লিটন তার কর্মী। নৌকার পক্ষে নির্বাচন করার কারণে লিটনকে গাছের সাথে বেঁধে আমার বিপক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হাসানুজ্জামান হাসান ও তার লোকজন মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে। নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান দাবি করেন পাওনা টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে এই মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। তিনি হামলাকারীদের কবল থেকে লিটনকে রক্ষা করে বাড়ি পৌছে দিয়েছেন দাবি করে বলেন রাজনৈতিক কারণে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তার নামে এ ধরণের মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। জায়গা-জমি কেনা-বেঁচা নিয়ে লিটনের কাছে কয়েকজন টাকা পাবে। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। ওসি জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল