লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় চতুর্থ দফায় ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র কিনতে গিয়ে দেখেন নিজ ওয়ার্ড থেকে তাদেরসহ একাধিক ব্যক্তির ভোট তালিকা উধাও। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর পৃথক দুইটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।
জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম বিছনদই গ্রামের আশরাফ আলী, যার ভোটার ক্রমিক নম্বর ৬৮ ও একই ওয়ার্ডের আলতাব হোসেন, যার ভোটার ক্রমিক নম্বর ১০৭। জন্ম সূত্রে তারা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা ও ভোটার। আগামী ২৩ ডিসেম্বর ইউপি নির্বাচনে উক্ত ওয়ার্ডের সম্ভাব্য সদস্য প্রার্থী হিসেবে দু’জনেই গণসংযোগ করে আসছেন। নির্বাচনের মনোনয়ন কিনতে গিয়ে দেখেন সদ্য প্রকাশিত ভোটার তালিকায় নিজ ওয়ার্ডে সম্ভাব্য দুই প্রার্থীসহ একাধিক ব্যক্তির ওই ওয়ার্ডে ভোট নেই।
পরে ভোটার তথ্য যাচাই করে দেখেন আশরাফ আলীর ভোট ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পার্শ্ববর্তী ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এবং আলতাব হোসেন’র ভোট ২ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে তারা আদৌ মনোনয়ন পাবেন কি-না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
ইউপি সদস্য প্রার্থী আশরাফ আলী বলনে, এবারের নির্বাচনে আমি ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থী। মেম্বার ও চেয়ারম্যানের প্রত্যায়নপত্র ছাড়া ভোট স্থানান্তর করা যায় না। প্রতিহিংসার কারণে প্রতিপক্ষরা আমার অজান্তে ভোট স্থানান্তর করে, যাতে আমি নির্বাচন করতে না পারি। ন্যায় বিচার চেয়ে গত বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
আরেক ইউপি সদস্য প্রার্থী আলতাব হোসেন বলেন, বাব-দাদা এবং নিজের বসতবাড়ি ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। যখন প্রথম ভোটার হয়েছি, তখন থেকে এই ওয়ার্ডে ভোট দিয়ে আসছি। এবারে আমি ভোট করব গ্রামবাসী সবাই জানে। ভোটে আমার জয় নিশ্চিত জেনে কে বা কারা ষড়যন্ত্র করে আমার ভোট ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ২ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানান্তর করেছে, যাতে আমি প্রার্থী হতে না পারি। নিরুপায় হয়ে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবিতে ইউএনওকে লিখিত অভিযোগ করেছি।
এসব ঘটনায় ডাউয়াবাড়ী ইউপি সদস্য আক্তারুজ্জামান স্বপনকে অভিযুক্ত করছেন তারা। কিন্তু তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের ভোট কে স্থানান্তর করেছে, তা আমি কিভাবে জানবো।
উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ বলেন, আমার জানা মতে তাদের বসতবাড়ি ও ভোট ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। হয়তো কেউ আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রত্যায়ন দিয়ে আশরাফ ও আলতাবসহ একাধিক ব্যক্তির ভোট নিজ ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তর করেছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামিউল আমিন বলেন, অভিযোগের বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই