ফরিদপুর শহরে অবস্থিত সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অভ্যন্তরে অবস্থিত হোস্টেলের সামনে থেকে কয়েকটি মেহগনি গাছ ও বকুল গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকালে সকলের অগোচরে কয়েকটি ভ্যানে করে পাতা দিয়ে ঢেকে গাছের গুড়িগুলো নিয়ে যায় কলেজের কয়েক কর্মচারী।
জানা যায়, বেশ কয়েকটি মেহগনি গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার পর গাছের গোড়া মাটি দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা হলে তিনি গাছ কাটার বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না বলে জানান। সরকারি কলেজের গাছ কাটার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কলেজের পূর্ব পাশের হোস্টেলের সামনে থাকা চারটি মেহগনি গাছের মাথা কাটা এবং ডাল ছাটা। এছাড়া পশ্চিম পাশের একটি গাছের বিশাল আকারের ডাল কেটে ফেলা হয়েছে। আরও কয়েকটি গাছের ডাল কাটার প্রস্তুতি চলছিল। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কলেজের কয়েক কর্মচারী ও গাছ কাটার সাথে যারা জড়িত রয়েছেন তারা কৌশলে সটকে পড়েন।
কলেজসংলগ্ন একটি শপিং মলের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা একজন সিকিউরিটি গার্ড জানান, সকালে তিনটি ভ্যানে করে গাছের বড় কয়েকটি অংশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভ্যানের উপর থাকা গাছের গুড়িগুলোকে পাতা দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়া হয়। যাতে কেউ সন্দেহ না করে। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর একটি ভ্যানে একই কায়দায় গাছের গুড়ি নিয়ে বের হওয়ার সময় এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় ভ্যানচালক শহরের বায়তুল আমান এলাকার রাসেলের সাথে।
রাসেল জানান, কলেজের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি তাকে গাছের গুড়িগুলো নিয়ে যেতে বলেছেন। তিনি কোনো টাকা পয়সা দেননি। শুধু গাছের ডাল কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। বিশাল আকারের গাছের গুড়িগুলো ডাল কিনা এমন প্রশ্নের জবাব সে দিতে পারেনি। এছাড়া গাছের গুড়িগুলো কেন পাতা দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তারও কোনো সদুত্তর ভ্যানচালক রাসেল দিতে পারেনি।
এ বিষয়ে কলেজের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শফিকুল ইসলাম বলেন, হোস্টেলের সামনে লাইট লাগানো হচ্ছে। গাছের ডালগুলোর কারণে আলো ঠিকমতে দেখা যায় না বিধায় প্রিন্সিপাল স্যার বলেছেন, ডালগুলো কেটে দিতে। তাই ডালগুলো কাটা হয়েছে।
ডাল না কেটে গাছের বড় অংশ কেটে নেওয়ার কারণ কী-এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম বলেন, এগুলো মেহগনি গাছের ডাল। অথচ দেখা গেছে, মেহগনি গাছের বড় কয়েকটি অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। যার কারণে গাছগুলো মরে যেতে পারে।
কলেজের হোস্টেল সুপার মো. আজগর আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সারাদিনই কলেজে ছিলাম। গাছ কাটার বিষয়টি আমি জানি না। তবে গাছের কিছু ডাল কাটা হয়েছে বলে শুনেছি।
গাছ কাটার বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কাজী গোলাম মোস্তফা জানান, গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কাউকে কিছু বলেননি। তাছাড়া গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।
বিডি প্রতিদিন/এমআই