উল্লাপাড়ার বড়হর ইউনিয়নের সড়াতৈল মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলে ছেলে-মেয়েরা কখনো স্কুল চত্বরে ইট দিয়ে আবার কখনো কলাগাছ পুতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে থাকে। স্কুলের ছাত্ররা দীর্ঘদিন ধরে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানালেও স্কুল কর্তৃপক্ষ সে দাবি পূরণ করতে পারেনি।
সড়াতৈল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান তালুকদার জানান, স্কুলের শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে ২০০৬ সালে তিনি একটি শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেসময় রাতের অন্ধকারে কে বা কারা অর্ধনির্মিত শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নিতে সাহসী হননি।
প্রধান শিক্ষক আরও জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতায়ে আসার পর তিনি আবারও স্কুলে শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। তবে তহবিলের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উল্লাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের কাছে কয়েকদফা আবেদন জানিয়েছেন। করোনা মহামারীর কারণে প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের অর্থনৈতিক অবস্থা একেবারেই নাজুক হয়ে পড়েছে। আর এতে স্কুল থেকে এটি নির্মাণ আপাতত সম্ভব হচ্ছে না।
সড়াতৈল মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ৫৫ বছর বয়সী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় প্রতিবছর ইট, কলাগাছ, বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে তাতে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা ফুল দিয়ে থাকেন। অমর একুশের দিনে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তারা স্কুলে অবিলম্বে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বড়হর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক নান্নু উক্ত স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণের আবেদনের বিষয়টি তাদের পরিষদে রয়েছে বলে জানান। প্রয়োজনীয় অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে স্কুলে শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, করোনার কারণে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়াও তিনি তার ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। তবে চলতি অর্থবছরেই জেলা পরিষদ থেকে সড়াতৈল স্কুলে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান মওদুদ আহমেদের সঙ্গে কথা বললে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে উল্লেখ করেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর