চুলের যত্নের জগতে আমরা সবাই ‘ডিপ কন্ডিশনিং’ শব্দটি শুনেছি। অনেকেই বাড়িতে এটি করেন, তবে বেশির ভাগ সময় সঠিকভাবে না জানার কারণে পুরো উপকার পান না। ডিপ কন্ডিশনিং আসলে কী, কেন দরকার এবং কীভাবে করবেন- এসবই জানা জরুরি।
ডিপ কন্ডিশনিং কী?
সাধারণ কন্ডিশনার প্রতিবার চুল ধোয়ার সময় ব্যবহারের জন্য তৈরি হলেও ডিপ কন্ডিশনার আলাদা। এটি চুলের ভিতরে গভীরভাবে প্রবেশ করে আর্দ্রতা ও পুষ্টি জোগায়। সাধারণত সপ্তাহে একবার বা দুই সপ্তাহে একবার ব্যবহার করা হয়। শুষ্কতা, ভাঙা চুল কিংবা রং করা ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য আলাদা আলাদা ডিপ কন্ডিশনারও পাওয়া যায়।
উপকারিতা
স্টাইলিস্ট রেভেন হুরতাডো বলেন, ডিপ কন্ডিশনিং চুলে আভা ফিরিয়ে আনে, ফ্রিজ কমায়, আর্দ্রতা বাড়ায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামত করে। আরেকজন বিশেষজ্ঞ রেক্স জিমিজোনের মতে, সঠিক রুটিনে করলে এর প্রভাব ১০-১২ বার ধোয়ার পরও বজায় থাকবে।
কারা ব্যবহার করবেন?
ডিপ কন্ডিশনিং সবার জন্য উপকারী। তবে ব্যবহারের ফ্রিকোয়েন্সি চুলের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন। ঘন ও রুক্ষ চুলে সপ্তাহে একবার ভালো, আর পাতলা ও সরু চুলে দুই সপ্তাহে একবার যথেষ্ট। অতিরিক্ত ব্যবহার করলে চুল ভারী বা তৈলাক্ত হয়ে যেতে পারে।
ডিপ কন্ডিশনিং করার ধাপ
১. চুল ধুয়ে নিন : হালকা শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
২. তোয়ালে দিয়ে শুকান : চুল পুরো ভেজা থাকা যাবে না, সামান্য স্যাঁতসেঁতে রাখুন।
৩. পণ্য লাগান : চুলের শেষ প্রান্ত থেকে শুরু করে সমানভাবে লাগিয়ে নিন। একটি চিরুনি ব্যবহার করলে ভালোভাবে ছড়িয়ে যাবে।
৪. সময় দিন : ১০-৩০ মিনিট রেখে দিন (ঘন চুলে বেশি সময় লাগতে পারে)।
৫. তাপ এড়িয়ে চলুন : প্রয়োজনে কুসুম গরম তোয়ালে ব্যবহার করুন, হিটার বা ড্রায়ার নয়।
৬. ধুয়ে ফেলুন : প্রথমে হালকা গরম জল, পরে ঠান্ডা জল ব্যবহার করুন, যাতে চুলে উজ্জ্বলতা আসে।
সঠিক পণ্য বাছাই
ভাঙা চুলের জন্য প্রোটিন বা সিরামিড, শুষ্কতার জন্য আর্দ্রতা ও এসেনশিয়াল অয়েল ভালো। তবে অতিরিক্ত প্রোটিন চুলকে ভঙ্গুর করতে পারে, তাই সতর্ক থাকতে হবে। সময় না থাকলে স্যালন ট্রিটমেন্টও একটি কার্যকর বিকল্প।
ডিপ কন্ডিশনিং কোনো বিলাসিতা নয়, বরং চুলকে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ ও সুন্দর রাখার সহজ উপায়। নিয়মিত সঠিকভাবে ব্যবহার করলে আপনার চুল হবে আরও নরম, মসৃণ ও প্রাণবন্ত।