৯৯৯-এ ফোন পেয়ে নাটোর শহরের হেমাঙ্গিনী ব্রিজ এলাকা থেকে শাকিল খান (২০) নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। পূর্ববিরোধের জের ধরে ছাত্রলীগ নাটোর জেলা শাখার নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শাহাদাৎ হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগকর্মী লিটন, জুয়েল, রানা ও সাদিকসহ ১০-১২ জন তাকে মারপিটসহ হত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিনি নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বুধবার রাত ৮টায় শহরের সদর হাসপাতাল সড়কের হেমাঙ্গিনী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারপিটের শিকার শাকিল শহরের উত্তর বড়গাছা এলাকার মৃত সুজন আলীর ছেলে এবং নাটোর এন এস সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে শাকিল সক্রিয় কর্মী।
পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার কলেজ ছাত্রলীগের আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দাওয়াত না দেওয়ায় শাকিল ও তার বন্ধুরা অনুষ্ঠান বর্জন করেন। সন্ধ্যায় শাকিল তার বন্ধু তামিমকে সাথে নিয়ে ঈদশপিং করতে অটোরিকশায় নিচাবাজারের দিকে রওনা হন।
পথিমধ্যে শহরের হাফরাস্তা এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাৎ হোসেনসহ কয়েকজন বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে রিকশার গতিরোধ করেন। তারা শাকিলকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকেন। তখন শাকিল দৌড়ে ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগ কার্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে প্রথম দফায় প্রাণে রক্ষা পান।
পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে যাওয়ার পথে তারা দ্বিতীয়বার হামলার চেষ্টা করলে শাকিল বন্ধুকে সাথে নিয়ে দৌড়ে হেমাঙ্গিনী ব্রিজ সংলগ্ন সততা ডায়াগনস্টিকের দ্বিতীয় তলায় যান। হামলাকারীরা সেখানে ঢোকার চেষ্টা করলে সেখানকার কর্মীরা তাদের বাধা দেন এবং দরজা লাগিয়ে আত্মরক্ষা করেন। তখন ডায়াগনস্টিকের বাইরে অবস্থান নেন হামলাকারীরা। ৩০ মিনিট সেখানে অবস্থান করার পর প্রাণরক্ষার্থে শাকিল জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে তাকে রক্ষা করার জন্য সহযোগিতা চান । ফোন দেওয়ার ১০ মিনিটের মাথায় রাত ৯ টায় নাটোর সদর থানা পুলিশ গিয়ে দুইজনকে সেখান থেকে উদ্ধার করে।
শাকিলের বন্ধু তামিম জানান, হামলাকারীদের সাথে অস্ত্র ছিল ।ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মীরা সাহসী ভূমিকা না নিলে আর ৯৯৯-এ ফোন দেওয়ামাত্র পুলিশ না এলে আজ শাকিলকে ওরা মেরেই ফেলতো। ভাগ্যিস বিপদ মুহূর্তে ৯৯৯ নম্বরে কল করার কথা মনে ছিল। কি এক ভয়ংকর অবস্থা তা সেখানকার সিসিটিভি দেখলে বুঝতে পারবেন।
আহত ছাত্রলীগ কর্মী শাকিল জানান, তিনি সুস্থ হয়ে এ ব্যাপারে নাটোর সদর থানায় অভিযোগ দেবেন।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ঘটনা সত্য না। আপাতত আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না।। ভেবেচিন্তে পরে জানাব ।
ছাত্রলীগ কর্মী লিটন বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। আমি ঘটনার সময় নাটোর পৌরসভার মেয়রের বাসায় ছিলাম।
নাটোর সদর থানার এসআই শরিফুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯-এ ফোন পাওয়ার পর আমরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। তখন শাকিলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার (ডায়াগনস্টিক) কর্মীরা ঘটনার সত্যাতা নিশ্চিত করেছে। এ ব্যাপারে তারা অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ