দেশের একমাত্র দিনাজপুরের পাথর খনি থেকে পাথর উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত বিস্ফোরক (অ্যামালসন এক্সপ্লোসিভ) সংকটে আবারও মধ্যপাড়া কঠিনশিলা খনি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে।
গত ১ মে থেকে খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।
সময়মতো বিস্ফোরক সরবরাহ না করায় দৈনিক গড়ে সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রতিদিন সরকারের লোকসান হবে প্রায় দেড় কোটি টাকা।
এর আগে গত ১২ মার্চ বিস্ফোরক দ্রব্য (অ্যমোনিয়াম নাইট্রেট) সংকটের কারণে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় খনি কর্তৃপক্ষ (এমজিএমসিএল) বলেছিল, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিস্ফোরক আমদানিতে বিলম্ব হয়েছিল। কিন্তু এবার কেউ কথা বলছেন না। চুক্তি অনুযায়ী খনির উন্নয়ন, উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চাহিদামতো প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও বিস্ফোরক সরবরাহ করবে খনি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে (জিটিসি) চুক্তির আওতায় নির্দিষ্ট সময়ে প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক সরবরাহ করতে না পারায় খনির উন্নয়ন ও পাথর উৎপাদন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে খনির ভেতরে ৪০-৫০ হাজার মেট্রিক টন পাথর মজুদ আছে।
মজুদকৃত পাথর শেষ হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক আমদানি করা না হলে খনি থেকে পাথর বিক্রিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে সরকারের যে সব উন্নয়ন প্রকল্প মধ্যপাড়া পাথর খনির উৎপাদিত পাথরের ওপর নির্ভরশীল সে সব প্রকল্পের কাজ ব্যাহতের আশংকা রয়েছে।
খনি সংশ্লিষ্টরা জানায়, পাথর উত্তোলন কাজে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও অ্যামালসন এক্সপ্লোসিভ অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান। চুক্তি অনুযায়ী খনি কর্তৃপক্ষ সময়মতো জিটিসিকে চাহিদা মাফিক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও অ্যামালসন এক্সপ্লোসিভ সরবরাহ করবে। কিন্তু গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে খনি কর্তৃপক্ষ জিটিসিকে চুক্তি মোতাবেক সময়মতো অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও অ্যামালসন এক্সপোসিভ সরবরাহ করতে পারেনি। তবে এবার অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সরবরাহ থাকলেও অ্যামালসন এক্সপ্লোসিভের সরবরাহ নেই।
জানা যায়, কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে এসব বিস্ফোরক আমদানি করা হয়। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পরিবহন সংকট সৃষ্টি হওয়ায় বিস্ফোরক আমদানিতে বিলম্ব হচ্ছে। এ মাসের শেষ সপ্তাহ নাগাদ বিস্ফোরকের একটি চালান বাংলাদেশে পৌঁছাবে বলে আশা করা যায়।
শুক্রবার মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লি. (এমজিএমসিএল) এর মহাব্যবস্থাপক (এসওএন্ডএম) ও মহাব্যবস্থাপক (ইউজিওএন্ডএম) (অ. দা.) মীর পিনাক ইকবাল জানান, বিষয়টি জেনেছি। এসব বিস্ফোরক দ্রব্য আমদানির প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ মাসের শেষ সপ্তাহে এর চালান পৌঁছাবে আশা করি।
এ বিষয়ে জানতে এমজিএমসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু দাউদ মোহাম্মদ ফরিদুজ্জামানকে তার মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন