২৮ মে, ২০২২ ২২:৩৬

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ

নরসিংদী প্রতিনিধি

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ

নরসিংদীর মনোহরদীতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের গাড়ি, নির্বাচনী কার্যালয় ও প্রচার মাইক ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার চরমান্দালিয়া ও খিদিরপুর ইউনিয়নে এই পৃথক ঘটনা ঘটে। হামলায় পুলিশসহ কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। 

এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে পুলিশের পক্ষ মনোহরদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাইজ উদ্দিন ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১২০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই শহিদুজ্জামান, এটিএসএআই সোহেল পারভেজ, কনস্টেবল আবু নাইম বিন হুদা। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চরমান্দালিয়া ইউনিয়নের আতাউর রহমান, হাসান হিরা ও সাধন।

পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতে সমেদ চান্দের বাজারে চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল কাদির এবং স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিছ উদ্দিন শাহিনের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এর আধা ঘণ্টা পর মাস্টার বাড়ি বাজারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন শাহিনের সমর্থকরা নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করে। তাৎক্ষণিক পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে হামলাকারীরা পালিয়ে পার্শ্ববর্তী মতির বাজারে অবস্থান নেয়। 

সেখানে শতাধিক ব্যক্তি জড়ো হয়ে পুনরায় নৌকার সমর্থকদের উপর হামলার প্রস্তুতি নেয়। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে উত্তেজিত সমর্থকরা পুলিশের উপর হামলা করে এবং গাড়ি ভাংচুর করে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ১১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়। তাদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল কাদির বলেন, আনারস প্রতীকের প্রার্থী শাহিনের সমর্থকরা আমার অফিসে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য মালামাল ভাঙচুর করে। ভাংচুরের খবর শুনে আমার সমর্থকরা এগিয়ে আসলে তাদের মারধর করে। এ সময় আহত হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, নৌকার সমর্থক ইকবাল হোসেন, সজিব হোসেন এবং কালা মিয়া।’

আনারস প্রতীকের প্রার্থী আনিছ উদ্দিন শাহিন বলেন, নৌকার সমর্থকরা আমার লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছে। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

এদিকে খিদিরপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জামিলের প্রচার মাইক, অটোরিকশা ভাঙচুর ও চালককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে সাগরদী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শনিবার বিকালে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান জামিল।

তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার পর সাগরদী বাজার এলাকায় মাইকে আমার প্রচারণা চলছিল। এ সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী রমিজ উদ্দিনের লোকজন আমার প্রচার মাইক, অটোরিকশা ভাংচুর এবং চালককে মারধর করে। এ ছাড়া নৌকার প্রার্থীর ছেলে-মেয়ে এবং কর্মীরা নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়াতে প্রতিনিয়ত আমাকে হুমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

তবে নৌকার প্রার্থী রমিজ উদ্দিন বলেন, এমন কোনো ঘটনা আমার জানা মতে ঘটেনি। প্রতিপক্ষরা মিথ্যাচার করছে। মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, পুলিশের উপর হামলা এবং গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর