মাদক একটি অভিশাপের নাম। আর এই মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যায়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। মাদকসেবী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ার ফলে মাদকের সরবরাহ বেড়েছে ক্যাম্পাসে। যেখানে স্বপ্নপূরণের জন্য নিজেদেরকে যোগ্য করে গড়ে তোলার কথা, সেখানে তারা বুঁদ হয়ে থাকছে নেশায়। মাদকের দৌরাত্ম্য থামাতে না পারলে শিক্ষার্থীরা অন্ধকারে পতিত হবে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সচেতন শিক্ষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী জানান, মাদকের চাহিদা বেড়েছে। গত কয়েক মাসে মাদক বিক্রি বেড়েছে চার-পাঁচ গুণ। ব্যবসায়ীরা মাদক ক্যাম্পাসে পৌঁছে দেন, আবার শিক্ষার্থীরাও এসে তাদের কাছ থেকে নিয়ে যান। এছাড়া কিছু শিক্ষার্থী তাদের কাছ থেকে ১০-২০ হাজার টাকাড় মাদক ক্রয় করে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে থাকেন।
প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই আবাসিক হলের রুম ও ছাদে, বঙ্গবন্ধু হলের সামনের পুকুর পাড়ে, ক্রিকেট মাঠ, জিয়া মোড় এলাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় লেক এলাকায় বসে মাদকের আসর। সেই আসরে নবীন শিক্ষার্থীরা যুক্ত হতে দেখা যাচ্ছে। গত বুধবার লুঙ্গীতে করে ১৫০ পিস ইয়াবা নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় বিশ্ববিদ্যায়ের প্রধান ফটক থেকে আনোয়ার জোয়াদ্দার নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। জব্দকৃত মাদকের মূল্য প্রায় ৪৫ হাজার টাকা।
সম্প্রতি গত ২৩ মে বঙ্গবন্ধু হলের পুকুর পাড়ের ক্রিকেট মাঠে মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে অজ্ঞান হয়ে যান হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর কুরাইশি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুত্ব হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক কুষ্টিয়া নিয়ে যেতে বলেন।
এছাড়া গত জানুয়ারি মাসে মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবন করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞন ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের শিক্ষার্থী দস্তগীর হোসেন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বিভাগের সহযোগীতায় ঠাকুরগাও মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্রে তাকে পাঠানো হয়। ঈদের ছুটির পর ক্যাম্পাসে পুনরায় সে মাদক গ্রহণ শুরু করে এবং অস্বাভাবিক আচরণ করে। পরে তাকে ফের মাদক পুনবার্সন কেন্দ্রে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা মাদক অভিযানে নেমেছি। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। আপনারা তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম বলেন, আমি ক্যাম্পাসের বাহিরে আছি। ক্যাম্পাসে এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ