নদী বেষ্টিত মানিকগঞ্জ বর্ষার সময় যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম নৌকা। বর্ষার আগমনে হরিরামপুর, ঘিওরসহ বিভিন্ন হাটে পর্যাপ্ত নৌকা উঠতে শুরু করেছে। পদ্মা যমুনায় পানি বৃদ্ধি পেলেও কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী,ইছামতি, কঙ্কাবতিসহ ভ্যন্তরিন নদীগুলিতে পর্যাপ্ত পানি না উঠায় নৌকার চাহিদা বাড়ছে না। হাটে প্রচুর নৌকা উঠলেও এখনো জমে উঠেনি নৌকা বেচা কেনা।
মানিকগঞ্জে যতগুলি নৌকার হাট রয়েছে তার মধ্যে ঘিওর হাট অন্যতম। শত বছরের পুরানো বৃহত্তম নৌকার হাট এটি। সিলেটে ভয়াবহ বন্যা, কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ ভ্যন্তরীণ নদ নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌকা ব্যবসায়ীরা প্রচুর নৌকা তৈরি করেন। কিন্তু পানি কমে যাওয়ায় নৌকার চাহিদা কমে যায়। সেই সাথে কমে গেছে হাটে ক্রেতার সংখাও।
ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়, হরিরামপুরের বেশিরভাগ নিম্নাঞ্চল বর্ষায় ডুবে যায়। রাস্তা ঘাটসহ বাড়ির আঙ্গিনায় পানি উঠে যায়। তখন নৌকা ছাড়া চলাফেরা একেবারে অসম্ভব হয়ে পরে। কিন্তু এখনো বর্ষার পানি না আসায় নৌকার কদর বাড়েনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘিওর উপজেলা কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ জামে মসজিদ মাঠে প্রচুর ডিঙ্গি নৌকা উঠেছে।তবে ক্রেতা একবারেই কম। ঘিওর বাজারের কাঠমিস্ত্রী নেপাল সূত্রধর, কমল সূত্রধর, মাসুদ ও হারেছ জানান, বর্ষা মওসুমে তারা নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন। বর্তমানে কাঠ, লোহা ও অন্যান্য সরঞ্জামাদীর দাম বেড়ে যাওয়ায় নৌকা বিক্রী করে লাভ হচ্ছে না। নৌকার আকার ও প্রকারভেদে প্রতিটি নৌকা তিন থেকে পনের হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তারা আরোও বলেন পানি বাড়লে নৌকার চাহিদা ও দাম দুটোই বাড়বে।
ঘিওর হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা নগেন সূত্রধর জানান, ১০ হাত লম্বা এবং আড়াই হাত প্রস্থের একটি নৌকার মূল্য চার হাজার টাকা। এরকম ১১/৩ সাইজের নৌকা ৫ হাজার, ১৩/৩ সাইজের দাম ৭ হাজার টাকায় বিক্রী হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের স্টিলের নৌকাও তিনি বিক্রি করেন। আজিজ নামে এক ক্রেতা বলেন পানি না হওয়ায় নৌকার দাম একটু কম।পানি বাড়ার সাথে নৌকার দাম বাড়তে থাকে।
ঘিওর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, এই নৌকার হাটটি ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে, এত বড় নৌকার হাট আমার নজরে আর কোথাও পড়েনি। প্রতি বছর এই সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ হাটে নৌকা কিনতে আসে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
বিডি প্রতিদিন/এএ