বগুড়ায় হাটে হাটে যেমন পশু বিক্রি বেড়েছে তেমনি পাড়ায় পাড়ায় কোরবানির পশু জবাইয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দামের ও মানের দা-ছুরি কেনাবেচা চলছে শহরজুড়ে। ভিনদেশির চেয়ে দেশীয় কামারশালায় তৈরি দা-ছুরিই বেশি কিনছে ক্রেতারা।
বগুড়া শহরের চেলোপাড়া, ১ নং রেলঘুমটি, ২ নং রেলঘুমটি, ৩ নং রেলঘুমটি, কাঁচা লোহার জন্য ভাংড়ি পট্টি, কাঁঠাল তোলা, চেলোপাড়া, কলোনীসহ কয়েকটি এলাকায় বিক্রি হচ্ছে পশুর চামড়া ছাড়ানো, গোস্ত কাটা, জবাই করার বিভিন্ন ধরনের ছোট ও বড় ছুরি, রামদা, চাকু, বটি, কাঠেরগুড়ি। বগুড়ার বাজারে দেশিয়ভাবে তৈরি ছুরি দেখা যাচ্ছে। চীনের ও বার্মার কথা বলে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন নামের প্যাকেট ছুরি। দেশীয়ভাবে তৈরি বিভিন্নমানের ছোট ছুরি ৩০ থেকে ৯০ টাকা, একটু বড় ছুরি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, রামদা ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বটি বিভিন্ন মানের আকারের ৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চা পাতি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বড় ধারালো পশু জবাইয়ের ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। এর সাথে বার্মিজ ও চীনের তৈরি সিলভার রঙের মান অনুযায়ী, চকচকে চাপাতি ৩৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা মূল্যেও বিক্রি হচ্ছে। চায়না ছোট ছুরি ১০০ টাকা, পশু জবাই করার ছুরি ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, দা ৩০০ থেকে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়া শহরের বিরেন কামার জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লা ও শ্রমিকের মূল্য বেড়ে গেছে। কিছুদিন আগেও প্রতি বস্তা কয়লার দাম ছিল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সেই কয়লা এখন বেড়ে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এ কারণে দা, ছুরি, বটি, চাকু ও চাপাতির দামও বেড়েছে।
দা-ছুরি বিক্রেতা ছাব্বির শেখ জানান, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে লৌহজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ছুরি প্রতি পিস ১০০ থেকে ২০০ টাকা, দা ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা, বটি ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা বড় ছুরি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা, চাপাতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
ছুরি কিনতে আসা আসলাম আলী নামের এক ক্রেতা জানান, ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। একটু আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কিনতে এসেছি। তবে গত বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, বটির দাম অনেকটাই বেশি। দাম বেশি হলেও কিনতে তো হবেই।
বগুড়া শহরের ২ নং রেলঘুমটির কাছের এক কাঠের গুড়ি ও ছুরি বিক্রেতা জানান, কোরবানি উপলক্ষে ছুরি, দা, রামদার বিক্রি বেড়েছে। বিভিন্ন দামের এবং মানের ছুরি বিক্রি হচ্ছে। কাঠের গুড়িও বিক্রি করা হচ্ছে। তেতুঁল কাঠের ছোট গুড়ি ৩০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর বড়গুলো আকার অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. সাইফুল ইসলাম জানান, মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার না করে দেশীয় খাবার খাইয়ে চলতি বছর জেলায় পশু মোটাতাজা করার জন্য কৃষক ও খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই হিসেবে আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জেলার ১২টি উপজেলার ৪৬ হাজার ১৫ জন খামারি মোট ৪ লাখ ২৭ হাজার ২৯৫টি গবাদি পশু কোরবানিযোগ্য করে তুলেছেন। এ বছর জেলায় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পশুর চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭৫টি।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা