বঙ্গোপসাগরে মাছের নির্বিঘ্ন প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলিশসহ সকল প্রজাতির মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা (২৩ জুলাই) শনিবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ আহরণের জন্য ফিশিং ট্রলারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে বাগেরহাটের প্রায় ১৩ হাজার জেলে বলেশ্বর ও পশুর নদীর মোহনায় জড়ো হয়েছেন। শনিবার বিকালে জেলা মৎস্য বিভাগ ও ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার সাগরের মাছ আহরণ করতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি শেষ করে শনিবার বিকালে পর্যন্ত বলেশ্বর ও পশুর নদীর মোহনায় জড়ো হয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার জেলে। কয়েকশত ফিশিং ট্রলারে করে এসব জেলেরা মাছ আহরণের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও দুই সপ্তাহের খাদ্য সামগ্রী বোঝাই করে সাগরে নামার অপেক্ষায় রয়েছে।
তবে, শনিবার মধ্যরাতে এসব জেলেরা মাছ আহরণে নেমে পড়লেও নিষেধাজ্ঞার সময়ে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জল সীমানায় প্রবেশ করে অবাধে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে আমাদের জেলেরা আর মাছ পায় না। যে কারণে গত বছর আমার ৫০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। আমার মত এই মৎস্য সম্পদের নির্ভরশীল বহু ব্যবসায়ী লোকসানে পরে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তাই ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ ও ভারতের একই সময় দেয়ার দাবী তার।
শরণখোলা উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, শুধুমাত্র শরণখোলা উপজেলার সমুদ্রগামী ৪ হাজার জেলে কয়েক শত ফিশিং ট্রলারের করে শনিবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা শেষের অপেক্ষায় বিকাল পর্যন্ত বলেশ্বর নদীর মোহনায় রায়েন্দা ও রাজৈর মৎস্য বন্দরে অপেক্ষায় রয়েছে। মধ্যরাতে এসব জেলেরা মাছ আহরণে নেমে পড়বে।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম রাসেল জানান, বঙ্গোপসাগরে মাছের নির্বিঘ্ন প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ১৯ মে মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। শনিবার মধ্যরাতে এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। ইতোমধ্যেই বাগেরহাটের সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলারের জেলে জাল ও ট্রলার মেরামত করাসহ মাছ আহরণের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও দুই সপ্তাহের খাদ্য সামগ্রী বোঝাই করে সাগরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা শেষ হবার অপেক্ষায় শনিবার বিকালে পর্যন্ত কয়েক শত ফিশিং ট্রলারের করে প্রায় ১৩ হাজার জেলে বঙ্গোপসাগরের বলেশ্বর ও পশুর নদীর মোহনায় জড়ো হয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার মধ্যরাতে এসব জেলেরা মাছ আহরণে নেমে পড়বে বঙ্গোপসাগরে। বাগেরহাট জেলায় ৩৯ হাজার ৬২৭ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ হাজারের অধিক জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর