কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে জটিলতায় স্থবির হয়ে পড়েছে কক্সবাজাররের উন্নয়ন কার্যক্রম। কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদের মেয়াদ শেষ হলে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই জটিলতা দেখা দেয়। কক্সবাজারের সর্বস্তরের জনগণ আবারও লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদকে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে পেতে চান। কক্সবাজারবাসীর মতে লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ প্রধানমন্ত্রীর একজন যোগ্য প্রতিনিধি হিসেবে তার মেয়াদে কক্সবাজারে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত করেছেন।
শুক্রবার সন্ধায় জেলার বৃহৎ সামাজিক সংগঠন আমরা কক্সবাজারবাসী এবং কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের যৌথ উদ্যোগে শহরের একটি অভিজাত হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলনে লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদকে আরো এক মেয়াদের জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়ার দাবি জানানো হয়। তারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আনম হেলাল উদ্দিন জানান, ২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর একান্ত আন্তরিকতায় যাত্রা শুরু করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় কক্সবাজারের কৃতি সন্তান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদকে। তার মেয়াদে কক্সবাজারে ৮ শত কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন হয়। এর মধ্যে আছে, নিজস্ব অর্থায়নে ৩শত ৫৮ কোটি টায় নির্মিত হয় আবাসন প্রকল্প। ২৫৮ কোটি টাকায় শেষ হওয়ার পথে কক্সবাজার শহরের ৫.২ কিমি প্রধান সড়কের কাজ। শহরের তিনটি মজাপুকুর সংস্কার করা হয় ৪৮ কোটি টাকায়। এছাড়াও ১১০ কোটি টাকায় নির্মান করা হয় দৃষ্টিনন্দন ১০ তলা নিজস্ব কউক ভবন। তার পারফর্মেন্সের কারণে তিনি ইতোমধ্যে অর্জন করেছেন শুদ্ধাচার পুরষ্কার।এছাড়াও ১০ তলা কউক ভবন নির্মাণ প্রকল্প থেকে ৪কোটি টাকা সাশ্রয় করে সরকারি তহবিলে ফেরত দিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। একইভাবে ২৮৩ কোটি টাকার প্রধান সড়ক প্রকল্প থেকেও টাকা সাশ্রয় হতে পারে বলে জানিয়েছেন কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ। তার একান্ত প্রচেষ্টায় পর্যটন শহর কক্সবাজারকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাঙ্খিত সেই আধুনিক কক্সবাজার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে একটি মাস্টার প্লানও সমাপ্ত হওয়ার পথে রয়েছে।
কক্সবাজারবাসী চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য এই রকম একজন সৎ যোগ্য ও দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তি লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদকে আরো এক মেয়াদে কউকের চেয়ারম্যান হিসেবে পেতে চায়।
গত ১৩ আগস্ট লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদের ৩য় মেয়াদের দায়িত্ব শেষ হয়। তার পুনরায় নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ইতোমধ্যে স্থবির হয়ে পড়ছে। উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক তিন বছর করে নিয়োগ দেয়ার বিধি থাকলেও তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে দুই বছর করে। প্রথম মেয়াদে চেয়ার টেবিল জনবল অফিস কিছুই ছিল না।
২য় মেয়াদের ২বছর করোনায় বিধ্বস্ত ছিল পুরো পৃথিবী। ৩য় মেয়াদে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে নেয়ার মহাপরিকল্পনা করেছেন মাত্র। এই অবস্থায় কক্সবাজারবাসী আশঙ্কা করছেন অন্য কাউকে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হলে প্রধানমন্ত্রীর কাঙ্খিত কক্সবাজার উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই কক্সবাজারবাসী আশা করছেন, প্রধানমন্ত্রীর কাঙ্খিত আধুনিক কক্সবাজার বাস্তবায়নে লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদকে আরো এক মেয়াদে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমরেড সমীর পাল, লিখিত বক্তব্য পাঠ আ ন ম হেলাল উদ্দিন সভাপতি কক্সবাজার নাগরিক ফোরাম, সাবেক পৌর মেয়র সরওয়ার কামাল, সাংবাদিক নুরুল ইসলাম, সাংবাদিক শামসুল হক শারেক, অধ্যাপক এ এস এম আনোয়ার হক, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, আনিসুল হক চৌধুরী, সফিনা আজিম, নুরুল আজিম কনক, সাংবাদিক ইকরাম চৌধুরী টিপু, সাংবাদিক মহসীন শেখ- সাংগঠনিক সম্পাদক আমরা কক্সবাজারবাসী, মা টিনটিন রাখাইন, সাংবাদিক শহিদুল্লাহ, সাংবাদিক আমানুল হক বাবুল, মুজিবুল হক, মোস্তফা কামাল রিফাত, মনোয়ারা মনি ও ইসমত জাহান প্রমুখ।