ঝিনাইদহে কোনো ভাবেই কাটছে না রাসায়নিক সারের তীব্র সংকট। সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাড়তি দাম নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে। জেল-জরিমানা করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না তাদের কারসাজি। কৃষকরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে ব্যাহত হবে আমন ধানসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন। আর কৃষি বিভাগ বলছেন, সারের অবৈধ মজুদ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা হরিণাকুন্ডু উপজেলা শহরের হলবাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সারের জন্য থাকে দীর্ঘ লাইন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না চাহিদামত সার। উপরন্তু সার নিতে হলে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় নানা কোম্পানির কীটনাশক।
একই ভাবে জেলার ৬টি উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে রাসায়নিক সারের তীব্র সংকট। ২০ টাকার ইউরিয়া সার নেওয়া হচ্ছে ২২ থেকে ২৪ টাকায়। আর পটাশ সার যেন সোনার হরিণ।
হরিণাকুন্ডু পোড়াহাটি গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেনসহ অনেক কৃষক অভিযোগ করে জানান, ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সার অবৈধ মজুদ করে বাড়তি দাম নিচ্ছে। যারা বেশী টাকা দিচ্ছে তাদের রাতের বেলায় সার দেওয়া হচ্ছে। দিনের বেলায় তাদের ঘরে সার আনতে গেলে বলছেন সার নেই। এটা ডিলারদের কারসাজির কারণেই সারের এই কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। অসাধু এই ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী তাদের।
বেশী টাকা নেওয়া ও সার মজুর করে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে ঝিনাইদহ শহরের সার ব্যবসায়ী সাধন কুমার ঘোষ জানান, সারের কোনো সংকট নেই এবং জোর করে কোনো কৃষকদের কীটনাশক কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে না।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান, ৬টি উপজেলায় ৬৩১ জন ডিলার ও সাব ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে সার সরবরাহ করা হয়। অনিয়ম, অবৈধ মজুদ আর বাড়তি দাম নেওয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ১২ জন ব্যবসায়ীকে ৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা জরিমানা ও ২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে পটাশ সারসহ সকল সারের সংকট দ্রুতই কেটে যাবে। হতাশ হওয়ার প্রয়োজন নেই।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর