টাঙ্গাইলের সখীপুরে সামাজিক ভাবে একঘরে করে রাখার প্রতিবাদে আমরণ অনশন করছেন তোরাব আলী নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার তিন মেয়ে। তিনি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন। তিনি পৌর এলকার সরকারি মুজিব কলেজ মোড়ের স্থায়ী বাসিন্দা।
এসময় মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী বলেন, আমার কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় আমার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার উপর অন্যায় অবিচার করে যাচ্ছে সমাজপতিরা। সমাজের কেউ তার প্রতিবাদ করে না। গত কুরবানীর ঈদে সমাজ থেকে আমার বাড়িতে কোনো কুরবানীর মাংস দেয় নাই। সমাজের মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে যদি কখনো মিলাদ হয় তাহলে মিলাদ শেষে আমার হাতে কোনো তবারক দেয় না। স্থানীয় কলেজ মোড়ের দোকানগুলোতে বলে দিয়েছে তারা যেন আমার ও আমার তিন মেয়ে তাদের ছেলে মেয়েদের কাছে কোনো কিছু বিক্রি না করে। এভাবে আমাকে ও আমার পরিবারকে দীর্ঘ নয় মাস ধরে এক ঘরে করে রাখা হয়েছে। আমি মানুষিক ভাবে খুবই অসহায় হয়ে আছি। আমার ভুল থাকলে আমার বিচার করুন। এ নিয়ে অনেকের কাছে গেছি। কেউ আমাকে সুযোগ দেয়নি।
আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সমাজ পতিদের কাছে আমি আমার অপরাধের বিচার চাই, আমার বিচার করুন তার পরেও আমাকে আর একঘরে করে রাইখেন না।
এসময় তার ছোট মেয়ে লাইলী জেরিন বলেন, আমরা তিন বোন, কোনো ভাই নাই। বাবার উপর কেউ কোন অন্যায় করলে প্রতবাদ করার কেউ নাই। আমরা তিন বোন বিবাহিত। আমাদের পরিবারকে অন্যায় ভাবে একঘরে করে রাখায় আমাদের শ্বশুর বাড়ির লোকজন ও অন্যান আত্মীয়রা নানা কথা বলে। আমাদের ছেলে মেয়েরা বড় হচ্ছে, তারা লজ্জা পায়। আমাদের এখন মরণ ছাড়া কোনো উপায় নাই।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ওই মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী ও তার মেয়ে সমাজের বিভিন্ন জনের নামে ছয়টি মামলা করেছেন। হয়তো তাই ওই পরিবারে সাথে সমাজের লোকজন কম কথা বলে। তাকে একঘরে করে রাখা হয়েছে এটা মিথ্যা কথা।
এ বিষয়ে সখীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি পৌর মেয়রকে জানানো হয়েছে। আশা করছি এর একটি সুষ্ঠু সমাধান করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল