চুরির অপবাদে মারধর করা হয়েছে রাজমিস্ত্রীকে। তিন লাখ টাকা পরিশোধের শর্তে স্বাক্ষরও নেওয়া হয়েছে স্ট্যাম্পে। অবশেষে অপমান সইতে না পেরে নাহিদ (২০) নামে রাজমিস্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পাইকলক্ষ্মীয়া গ্রামে।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নাহিদের বড় ভাই দ্বীন ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের গান্ধারচর গ্রামের বাবুল মিয়া (৪৫), তার ছেলে নাঈম (২৫) ও একই গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে ইয়াসিনকে (২৫)।
নিহত নাহিদ পাইকলক্ষ্মীয়া গ্রামের মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে।
মামলার বাদী দ্বীন ইসলাম জানান, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে পাকুন্দিয়ার মির্জাপুর এলাকা থেকে ছাদ ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ঠিকাদারের কিছু মালামাল চুরি হয়। এদিন রাতেই ঠিকাদার বাবুলের আরও দুই কর্মচারী রাজু ও হাসান ঢাকায় চলে যান। এ ঘটনায় বাবুলসহ অন্য আসামিরা ৮ সেপ্টেম্বর সকালে পাকুন্দিয়া বাজারে বাবুলের নিজস্ব গ্যারেজে ডেকে নেন নাহিদ ও আজিমকে। সেখানে তাদেরকে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয়। খবর পেয়ে তিনি (মামলার বাদী) সেখানে গিয়ে তার ভাইয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন দেখতে পান। এ সময় বাবুল ও পাকুন্দিয়া বাজারের গরুরহাটা এলাকার মেহেদী তাকে বলেন, চুরি যাওয়া মালামাল বাবদ তিন লাখ টাকা পাঁচদিনের মধ্যে পরিশোধের শর্তে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে তার ভাইকে নিতে হবে। ভাইয়ের অবস্থা দেখে শর্ত মেনে এখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভাইকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তিনি।
এদিকে চুরির অপবাদ সইতে না পেরে ওই দিন রাত পৌনে ৯ টার দিকে বাড়িতে বিষ খেয়ে বাড়ির উঠানে কাতরাতে থাকেন নাহিদ। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক শুক্রবার তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে নেওয়ার পথে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মৃত্যু হয় নাহিদের।
পাকুন্দিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান জানান, এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে নাহিদের বড় ভাই দ্বীন ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুই জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা