রংপুর র্যাব সদস্যরা অটোরিকশা চালককে গলা কেটে হত্যা ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ক্লুলেস মামলার সহযোগীসহ প্রধান আসামি গ্রেফতার এবং হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে। সোমবার বিকেলে রংপুর নগরীর র্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব ১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস এ তথ্য জানান।
র্যাব১৩ এর অধিনায়ক জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রতিদিনের ন্যায় সুলতান মিয়া মিঠাপুকুরের নিজ বাসা থেকে অটোরিকশাটি নিয়ে বের হয়ে আর ফিরে না আসায় তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করা হয়। মোবাইলে রিং হলেও কেউ রিসিভ করেনা। পরদিন সকালে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে সুলতান মিয়ার ছোট ভাই মোঃ শরিফুল ইসলামের স্ত্রীকে ফোন করে সুলতান মিয়ার গলা কাটা লাশ উদ্ধার সম্পর্কে জানায়। পরবর্তীতে সুলতান মিয়ার বাবা মোঃ আব্দুল গফুর বাদী হয়ে ৬ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১৩ একটি আভিযানিক দল উক্ত ঘটনার বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে রংপুর নগরীর পার্কের মোড় থেকে এই ক্লুলেস হত্যা মামলার প্রধান আসামী রংপুর নগরীর আশরত পাড়ার মৃত বাবুল চৌধুরীর ছেলে মোঃ সুজন চৌধুরী (৪০)কে গ্রেফতার করে এবং হত্যার রহস্য উন্মোচন করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, আসামী মোঃ সুজন চৌধুরী (৪০) স্বীকার করে যে, তার সহযোগী কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ মমিনুর ইসলাম (২৯) ওইদিন সুলতান মিয়ার অটো চার্জারে ঘুরবে বলে ভাড়া নেয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অটো চালককে খাবার খাইয়ে রংপুর নগরীর পার্কের মোড় থেকে গঙ্গাচড়া মহীপুর ব্রীজ এর ওপারে নিয়ে যায়। সেখানে চা, সিগারেট খাওয়ার বাহানা করে সময় ক্ষেপন করে এবং সহযোগী মোঃ মমিনুর ইসলাম ভিকটিম সুলতান মিয়াকে খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে তা খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। আসামী মোঃ সুজন চৌধুরী এবং তার সহযোগী মোঃ মমিনুর ইসলাম মিলে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে তার মৃতদেহ ক্যানলে ফেলে দেয়।
আসামি মো. সুজন চৌধুরী’র স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মো. মমিনুর ইসলামকে তার নিজ বাড়ি লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানার কাকিনা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেখানো মতে সুলতান মিয়ার অটোরিকশাটি যার আনুমানিক মূল্য ৭০ হাজার টাকা কালীগঞ্জের মৃত জহুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ সাদেকুল ইসলামের নিকট হতে উদ্ধার করা হয়। সাদেকুলের নিকট অটো রিকশাটি ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আসামীদের দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি ঘটনাস্থলের পাশের ধান ক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের ব্যবহৃত মোবাইলফোন, সংযুক্ত সিম, ছিনতাইকৃত অটোরিক্সা এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
বিডি প্রতিদিন/এএম