পানি কমা-বাড়ার সাথে যমুনা নদীর অরক্ষিত তীরে ভাঙ্গন তীব্র হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভাঙ্গনে যমুনার পশ্চিমতীর সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও পূর্বতীর চৌহালীতে ভাঙ্গন শতাধিক বসতভিটা ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন কবলিতরা নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। আর ভাঙ্গনের হুমকির মুখে থাকা মানুষগুলোর নির্ঘুম রাত কাটছে।
এ অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে ভাঙ্গন কবলিতদের মধ্যে। পানি বোর্ডের আশা ছেড়ে দিয়ে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য প্রতিনিয়ত বিশেষ মোনাজাত করছে। শুক্রবারও সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চর নাকালিয়া গ্রামসহ আশপাশের সাত গ্রাম চর নাকালিয়া, দেওয়ানগঞ্জ, চর বিনানুই, মিটুয়ানি, চরসলিমাবাদ, ভূতের মোড়, রেহাই পুকুরিয়া রক্ষায় মানুষ চরনাকালিয়া জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ শেষে যমুনা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে ভয়াবহ ভাঙ্গণরোধে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেছেন।
আব্দুল করিম মাস্টারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মওলানা ক্বারি মো. নাসির উদ্দিন। এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন, চরনাকালিয়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. ময়নুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আব্দুল বাতেন, দুলাল শেখ ও আবু সামা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বর্ষা মৌসুম থেকে চৌহালী উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলে দশটি গ্রামে ভয়াবহ আকারে যমুনা নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনের তাণ্ডবে এসব গ্রামের প্রায় ২শতাধিক বাড়িঘর, ফসলি জমি, তাঁত কারখানা, প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদরাসা, মসজিদ, কবরস্থান ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে নিঃস্ব হয়ে গেছে প্রায় ২ হাজার মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন পূর্বে ভাঙ্গন রোধে ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু ফের ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। বর্তমানে ভাঙ্গনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যদি অনুমতি পাওয়া যায় তবে নতুন করে ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হবে। তবে ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধে প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে। অনুমোদন হলে স্থায়ী করা করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর