ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বিচার চলাকালে এক নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দেশটির প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইকে লক্ষ্য করে এক বৃদ্ধ ব্যক্তি জুতা নিক্ষেপ করেছেন। তবে জুতাটি বেঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছায়নি। তৎক্ষণাৎ নিরাপত্তা কর্মীরা ওই ব্যক্তিকে আটক করে হেফাজতে নেন।
এমন ঘটনায় বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই বলেছেন, “আমিই শেষ ব্যক্তি যিনি এই ধরনের ঘটনায় আক্রান্ত। শুনানি চলতে দিন।”
ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, প্রধান বিচারপতির দিকে জুতা নিক্ষেপকারী ব্যক্তি একজন আইনজীবী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “সোমবার দিনের প্রথম শুনানি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই বৃদ্ধ ব্যক্তি স্লোগান দিতে থাকেন- সনাতনের অপমান ভারত সহ্য করবে না। এরপরই তিনি প্রধান বিচারপতির দিকে জুতা ছুড়ে মারেন।”
নিরাপত্তাকর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে এগিয়ে গিয়ে তাকে কোর্টরুম থেকে বের করে নিয়ে যান। জানা গেছে, ওই ব্যক্তির কাছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও কর্মচারীদের জন্য প্রদত্ত প্রক্সিমিটি কার্ড ছিল। কার্ডে তার নাম লেখা ছিল কিশোর রাকেশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করার পেছনে তার উদ্দেশ্য জানা যায়নি। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিস্তারিত জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ঘটনার সময় প্রধান বিচারপতি গাভাই ছিলেন সম্পূর্ণ শান্ত। এক আইনজীবী জানান, “তিনি হেসে বলেন- আমিই শেষ ব্যক্তি যিনি এই ধরনের ঘটনার শিকার হলাম। অনুগ্রহ করে শুনানি চালিয়ে যান।”
সিনিয়র আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং এক্স বার্তায় বলেন, ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা উচিত। আইনজীবীর নাম প্রকাশ করা উচিত এবং তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এটি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ওপর একটি স্পষ্ট বর্ণবাদী আক্রমণ বলে মনে হচ্ছে।
কয়েক দিন আগে খাজুরাহোর একটি ৭ ফুট ভাঙা বিষ্ণুমূর্তি পুনর্নির্মাণের আবেদন সংক্রান্ত এক মামলায় মন্তব্য করে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ভারতের প্রধান বিচারপতি। আবেদনটি খারিজ করার সময় তিনি বলেছিলেন, “যাও, দেবতাকে নিজেই কিছু করতে বলো।”
এই মন্তব্যকে অনেকেই ভগবান বিষ্ণুর ভক্তদের প্রতি অসম্মানজনক বলে আখ্যা দেন। পরে গাভাই ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “সামাজিক মাধ্যমে আমার মন্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি সব ধর্মকেই সম্মান করি।” সূত্র: এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে
বিডি প্রতিদিন/একেএ