ইসরায়েল ইস্যুতে কঠোর হতে ডাচ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির জনতা। এ জন্য রবিবার আমস্টারডামে কমপক্ষে আড়াই লাখ মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। তারা গাজায় গণহত্যার সঙ্গে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানায়।
একই সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
তারা বলেন, ডাচ সরকার পদক্ষেপ না নেওয়ার মধ্য দিয়ে ‘রেড লাইন’ বা চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে। এ জন্য বিক্ষোভকারীরা এদিন লাল পোশাক পরে অংশ নেন। মিউজিয়ামপ্লেইন এবং এর আশপাশের এলাকা বিক্ষোভকারীতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনি পতাকা ও প্লাকার্ড। বিক্ষোভ শুরুর কমপক্ষে আড়াই ঘণ্টা পরে তারা মিউজিয়ামপ্লেইন ত্যাগ করেন। সেখান থেকে ভন্ডেলপার্কগামী সড়ক ধরে বিক্ষোভ অগ্রসর হতে থাকে।
বিক্ষোভকারী ডেবোরা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মনে করি না যে এককভাবে আমি কোনও কিছু করতে পারব। কিন্তু যখন সবাই একত্রিত হন, বিশাল একটি গ্রুপে পরিণত হয়। তখন বিশ্ব দেখতে পায় বহু মানুষ আসলেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। অনেক পরিবারের সদস্যরা তাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে যোগ দেন বিক্ষোভে। তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের ছোট ছোট পতাকা। তারা লাল স্কার্ফ ও রেইনকোট পরিহিত প্রবীণ দম্পতিদের পাশাপাশি হেঁটে যেতে থাকে। তরুণ বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল বাসায় তৈরি প্লাকার্ড। তাতে লেখা- ‘নো পিস উইদাউট জাস্টিস’। অর্থাৎ ন্যায়বিচার ছাড়া কোনওদিন শান্তি আসে না।
বিক্ষোভের সময় ভবনগুলোর মধ্যে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ ধ্বনি প্রতিধ্বনি তোলে। ব্যস্ত মার্কেটগুলো থেকে জনতা জানালায় দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দর্শন করে। একজন তরুণের টি-শার্টে লেখা ছিল- ‘১৬,৩৮২ জন শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে’। একজন বালিকা একটি কালো প্লাকার্ড বহন করছিল। তাতে লেখা- আপনার নীরবতাই হলো সহিংসতা, নিজেকে শিক্ষিত করে তুলুন। অন্য এক বিক্ষোভকারী বলেন, ইসরায়েলে বড় মাত্রায় বিনিয়োগকারী নেদারল্যান্ডস। তাদের কাছে আমরা একটি বার্তা পাঠাতে পারি যে, আসলেই এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। সম্প্রচার মাধ্যম এনওএসের মতে, এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন ইহুদি সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি গ্রুপ।
তারা এর মধ্য দিয়ে এটাই বুঝাতে চান যে, ইসরায়েলি নীতি পুরো ইহুদি সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি নয়। ডাচ রেল অপারেটর এনএস বলেছে, আমস্টারডামে আগত মানুষের চলাচল ঠিক করতে তাদেরকে ট্রেনে বগি বাড়াতে হয়েছে। সেখানে মেট্রো সার্ভিসও বাড়ানো হয়। তবে ট্রাম সার্ভিস ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ আয়োজন করে কমপক্ষে ১৩০টি গ্রুপ। এর মধ্যে আছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, অক্সফাম নোভিব, প্যাক্ট এবং দ্য রাইটস ফোরাম। সূত্র: ডাচ নিউজ, রয়টার্স, আল-জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/একেএ