ফরিদপুরের নগরকান্দায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল গোডাউন থেকে ডিলার কতৃক চুরির চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাতেই ইউএন গোডাউন পরিদর্শন করেছেন।
জানা গেছে, কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা কাজী। তিনি গত ১৫ সেপ্টেম্বর নগরকান্দা সরকারী গোডাউন থেকে ৩৭৩ বস্তা চাল উত্তোলন করে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের একটি কক্ষে রাখেন। রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এ চাল তালিকাভুক্ত ৩৭৩ জন হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ১৫ টাকা কেজি দরে জনপ্রতি ৩০ কেজি করে বিক্রি করার কথা ছিল।
শনিবার রাতে ডিলারের সহযোগী চাল ব্যবসায়ী কোদালিয়া গ্রামের ইয়াদ আলী মাতব্বর ও তার ভাতিজাকে নিয়ে গোডাউন খুলে চাল সরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এলাকার এক ব্যক্তি বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় কয়েকজন গনমাধ্যমকর্মীকে সংবাদ দেয়। গনমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে চালের বস্তা মাথা থেকে ফেলে তারা পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ইমাম রাজী টুলু রাতেই ঘটনাস্থানে উপস্থিত হয়। তিনি গোডাউনে ডুকে চাল চুরির চেষ্টার কিছু আলামত সংগ্রহ করে গোডাউনে অতিরিক্ত তালা ঝুলিয়ে দেন এবং রবিবার চাল বিক্রির স্থগিত করেন।
ডিলার তোতা কাজি বলেন, গোডাউন থেকে চাল উত্তোলন ও বিতরণ করার জন্য চাল ব্যবসায়ী ইয়াদ আলীকে আমি লিখিতভাবে দায়িত্ব দিয়েছি। চাল চুরির চেষ্টার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
অভিযুক্ত ইয়াদ আলি বলেন, আমার ভাতিজাকে নিয়ে আমি রাতে গোডাউনে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি চাল চুরির কোনও চেষ্টা করিনি। গোডাউনের চাল ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য রাতে গোডাউনে গিয়েছিলাম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, ইয়াদ আলী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আক্কাস আলীর ভাই বিধায় ওদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায়না। কয়েকবার এই গোডাউন থেকে রাতে চাল বের করে নিয়েছে। রাতে গোডাউন থেকে চাল সরিয়ে পরদিন ৩০ কেজি চালের পরিবর্তে ২৬ থেকে ২৮ কেজি চাল বিতরণ করে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আফজাল হোসেন বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে গোডাউনে গিয়ে মিলিয়ে দেখেছি সব চাল ঠিক আছে। কিন্তু সে যে গোডাউন থেকে চাল সরানোর চেষ্টা করেছিল তার কিছু আলামত পাওয়া গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, সংবাদ পেয়ে রাতেই আমি গোডাউনে উপস্থিত হয়েছি। চাল সরানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। চাল বিক্রি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আরো গভীর ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে উক্ত ডিলারকে বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগ করা হবে। আর ইয়াদ আলীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ