৫ অক্টোবর, ২০২২ ০৩:৫৮

পরিত্যক্ত পুকুরপাড়ে নবজাতকের চিৎকার, অতঃপর...

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

পরিত্যক্ত পুকুরপাড়ে নবজাতকের চিৎকার, অতঃপর...

কুষ্টিয়ায় এবার একটি পরিত্যক্ত পুকুরের পাড় থেকে জীবিত এক নবজাতক শিশু পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের দহকুলা গ্রামের তেকনাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দহকুলা গ্রামের তেকনাপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের বসত বাড়ির একটি পরিত্যক্ত পুকুর পাড়ে ওই নবজাতকের কান্না শুনে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পান। এক দিন বয়সী ওই নবজাতক একজন কন্যা। তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই নবজাতক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতালের নার্সরা তার সেবা দিচ্ছেন। 

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস জানান, বর্তমানে ওই নবজাতক শিশুটিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে। তার অবস্থা এখন বেশ ভালো আছে। আমরা সার্বক্ষণিক ওই নবজাতকের খোঁজ-খবর রাখছি।

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান জানান, কে বা কারা লোক চক্ষুর অন্তরালে ওই নবজাতক (কন্যা) শিশুকে পুকুর পাড়ের ঝোপে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ওই নবজাতকের প্রকৃত পিতা-মাতাকে শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

কুষ্টিয়া সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ মুরাদ হোসেন জানান, শিশুটির জন্য দুধ কিনে দেওয়া হয়েছে। নবজাতকটির পোশাক থেকে শুরু করে তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চাহিদা মাফিক সবকিছু সরবরাহ করছেন। তার চিকিৎসায় কোনো ক্রটি রাখা হচ্ছে না। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বেলা তিনটার দিকে দহকুলা থেকে শাহারা খাতুন নামের এক নারী একটি নবজাতক নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইকবাল হোসেন জানান, এক দিনের নবজাতক মনে হচ্ছে। শিশুটির শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো। তারপরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েক দিন তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। 

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, শিশুটির সব রকম চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সার্বিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। শিশুটির বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে এক নারী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে একটি ছেলে শিশু জন্ম দিয়ে তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সেখানে রেখে শিশুটিকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিলেট বিভাগে কর্মরত নি:সন্তান একজন এসিল্যান্ডের (ম্যাজিষ্ট্রেট) হাতে শিশুটির দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর