মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে বাড়িঘরে লুটপাট ও নির্যাতনের ভয়ে বাড়ি ছেড়েছে শতাধিক পরিবারের নারী-পুরুষ। সদর উপজেলার চারাঞ্চলের আধারা ইউনিয়নের সোলারচর, বকুলতলা, মাঝিকান্দি ও আধারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের বিরোধ দীর্ঘ ৩০ বছরের। এর মধ্যে অর্ধ শতাধিকবার দুই গ্রুপ বিভিন্ন সময়ে সংঘর্ষের জড়িয়েছে। এসব সংঘর্ষের হতাহতের ঘটনাও রয়েছে একাধিক। সেই বিরোধিতার জের ধরে গত ১৭ অক্টোবর সংঘর্ষের জড়ায় গত ইউপি নিবার্চনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হক মোল্লা এবং আধারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সুরুজ হোসেন মেম্বারের গ্রুপের সাথে একই ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আলী হোসেন সরকার গ্রুপের সমর্থকরা। সেই সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে মনির হোসন মোল্লা নামে এক পথচারী বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। যদিও পথচারী কোনো পক্ষের লোক নয়। সে দুই পক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে গুলিতে গুরুতর আহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সেই ঘটনাকে পুঁজি করে একটি পক্ষ তাদের প্রতিপক্ষের লোকজনসহ গ্রামের নিরীহ মানুষদের জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এছাড়া প্রতিপক্ষের বাড়িঘরসহ নিরীহ মানুষের বাড়িঘরে লুটপাট চালানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে লুটপাটের অভিযোগ এনে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্তরা।
লুটপাটের শিকার হয়ে গ্রামছাড়া সোলারচরের জহির উদ্দিন বেপারী বলেন, দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত পথচারীকে পুঁজি করে একটি পক্ষ গ্রামের মানুষদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রামছাড়া করে বাড়িঘরে ব্যাপক লুটপাট চালাচ্ছে। এতে প্রায় শতাধিক পরিবারের নারী-পুরুষ গ্রামছাড়া।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামি হওয়া মানবাধিকার কর্মী আলতাফ হোসেন বলেন, আমি গ্রামে থাকি না। আর এই ঘটনার সাথে কোনোভাবেই জড়িত না। সামাজিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় আমাকে হত্যা মামলার আসামি করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করা হচ্ছে।
হত্যা মামলার বাদী মো. আমজাদ সরকারের সাথে একাধিকবার মুঠফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না জানিয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তারেকুজ্জামান বলেন, হত্যা মামলায় বাদী পক্ষ যাদের নাম উল্লেখ করে আসামি করেছে তাদের নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। ঘটনার সাথে জড়িত না এমন কাউকে পুলিশ হয়রানি করবে না এবং তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে প্রকৃতভাবে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও বাড়িঘরে লুটপাটের একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই