বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের জলোচ্ছ্বাসে সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভেঙে ৪ শতাধিক বাড়ি-ঘরসহ বিস্তির্ণ এলাকার প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাতের জলোচ্ছ্বাসে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে সুন্দরবন উপকূলের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনায় মো. নয়ন (২৮) নামে এক জেলে নিখোঁজ রয়েছে। ওই সময়ে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ভেগা স্টেন্ডান্ট নামে একটি বিদেশি জাহাজ ২১ জেলেকে উদ্ধার করলেও জেলে নয়ন সাগরে ডুবে যায়। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ নয়নের কোনো খোঁজ মেলেনি।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় কিছু কাঁচা ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত ও গাছপালা উপড়ে গেলেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষি ও মৎস্য খাতে। ঘূর্ণিঝড়ে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ও গাছপালার কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ম্যানগ্রোভ এই বনের একমাত্র মিঠা পানির উৎস ৭টি পুকুরের পাড় ভেঙে লবণ পানি প্রবেশ করাসহ এক কিলোমিটার সড়কসহ অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। অবিরাম বর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে জেলার ৫টি উপজেলার ৫২৫টি মাছের ঘের (মাছের খামার) ও ২২৫টি পুকুরের মাছ। মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ ৮৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এছাড়াও জেলার ৯টি উপজেলায় ১ হাজার ৩৮৫ হেক্টর রোপা আমন ধান, ফসলসহ রবি-শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে রোপা আমন ৮৫০ হেক্টর, সবজি ৩৭৫ হেক্টর, কলা ১১০ হেক্টর, মরিচ ২০ হেক্টর, পান ১৭ হেক্টর, পেপেসহ অন্যন্য ১৩ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। তবে টাকায় ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি কৃষি বিভাগ।
সিত্রাংয়ে জলোচ্ছ্বাসে ৭টি পুকুরের পাড় ভেঙে লবণ পানি ঢুকে মিঠা পানির উৎস নষ্ট হয়েছে। দুবলা, কটকা, শ্যালা, কোকিলমুনিসহ সুন্দরবনের ৭টি পুকুরে লবণ পানি প্রবেশ করায় বন্যপ্রাণীর খাবার পানির উৎস নষ্ট হয়েছে। এছাড়া কটকা রেস্ট হাউজসহ কোকিলমুনি ও কটকা বন অফিসের রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের পানির তোড়ে শ্যালা বন অফিসে জব্দ করা একটি গাছের লট ভেসে গেছে। এছাড়াও জেলার ৯টি উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়া ও তার ছিড়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরসহ গ্রামগুলো মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন