ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে মেঘনা উপকূলীয় এলাকা লক্ষ্মীপুুর। জেলা সদর, কমলনগর-রামগতি ও রায়পুরে অন্তত ৩শ’ কাঁচা ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। কয়েক শতাধিক ছোট-বড় গাছ উপড়ে পড়েছে, বহুস্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে জেলা জুড়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এখনো। এদিকে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে অনেকের পুকুর- ঘেরের মাছ ও ফসলী জমি। এতে করে চরম ভোগান্তি ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন এখানকার মানুষ। জেলা প্রশাসক বলছেন- ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা করা হবে।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত হানে লক্ষ্মীপুুর মেঘনা উপকূলে। সন্ধ্যা থেকে রাতভর থেমে থেমে বৃষ্টি ও প্রবল ঝড়ো হাওয়ায় প্রকম্পিত করে তোলে পরিবেশ। বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় সর্বত্র। মঙ্গলবার সকালে জেলা সদরের টুমচর, চররমনিমোহন, শাকচর, রামগতির বড়খৈড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে রাতভর সিত্রাং এর রেখে যাওয়া তান্ডব এর চিত্র। এসব এলাকা লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে শক্তিশালী এ ঘূর্ণিঝড়টি। স্বাভাবিক জোয়ারের চাইতে ৪-৫ ফুট উচ্চতায় পানি উঠে প্রবেশ করেছে নদী তীরবর্তী লোকালয়ে। স্থানীয় সূত্র বলছে, জেলার বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় অন্তত ৩শ কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। রাস্তা ঘাটে, বাড়ি ও বাগানে কয়েক শতাধিক ছোট-বড় গাছ উপড়ে পড়েছে, বহুস্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। জেলা জুড়ে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে মাছের খামার, ফসলী জমি, ভেঙ্গে গেছে রাস্তা ঘাট। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এখানকার হাজার হাজার মানুষ। অনেকেই শেষ আশ্রয় বসতঘর হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানান সদরের শাকচর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ রহিমা, বাবুল, চররমনী এলাকার বাদশাহ মিয়াসহ অনেকে।
এ দিকে পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন জানান, বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক করতে আরো দুই দিন সময় লাগবে। পুরো জেলায় ১২০টি টিম কাজ করছে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, সিত্রাং এর আঘাতে ঘর-বাড়ি, গাছপালা ও ফসলী জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে। পরে তাদের ক্ষতির পরিমাণ অনুযায়ী সহযোগিতা করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম