পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটি প্রত্যাখান করে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গবার (০৮ নভেম্বর) রাতে শহরের আলিয়া মাদ্রাসা মোড় থেকে মিছিল বের করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ট্রাফিক মোড় এলাকায় প্রতিবাদ সভা করেন তারা।
এসময় তারা গত সোমবার রাতে ঘোষণা করা জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবি জানান তারা। প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব বিশ্বাস, সহ-সম্পাদক শীষ মোহাম্মদ সহ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা।
এসময় বক্তারা বলেন, সম্মেলন ছাড়া প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দেয়া কমিটিতে বিতর্কিতদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয়েছে। সেখানে বিগত দিনে দলে মেধা, যোগ্যতা, ত্যাগ ও পরিশ্রমের মূল্যায়ন হয়নি।
কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, পাবনা জেলার মত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে এমন একজনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে, যাকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মীরা তো দূরের কথা অধিকাংশই নেতাই চেনেনা। স্থানীয় রাজনীতিতে তার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই। জাতীয় নির্বাচনের সামনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের এই বিতর্কিত কমিটি দলকে সাংগঠনিকভাবে দূর্বল করে ফেলবে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক শীষ মোহাম্মদ বলেন, জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণায় দেরী হওয়ায় আমরা ভেবেছিলাম যাচাই বাছাই করে যোগ্যতার মূল্যায়ণ করে কমিটি দেয়া হবে। কিন্তু বাস্তব অর্থে এমন ব্যক্তিদের নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে, যাদের ছাত্রত্ব নেই, জেলার রাজনীতিতে আনকোরা অপরিচিত। আমরা শুনেছি বিতর্কিত এক ঠিকাদারের টাকায় মীর রবিউল সীমান্তকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আমরা এই কমিটি বাতিল ও যোগ্যতার মূল্যায়নে নতুন কমিটি চাই। অন্যথায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।
এ বিষয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অন্যতম অংশীদার পাবনা জেলা ছাত্রলীগের যে কমিটি হয়েছে তা পাবনা জেলা ছাত্রলীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ করেছে বলে আমি মনে করি। এ ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা ও যাচাই বাছাই করে কমিটি দিলে তা সর্বজন গ্রহণযোগ্য হতো। উক্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদককে কেউ চেনে না। তার সাথে পাবনার ছাত্রসমাজের কোন প্রকার সম্পর্ক নাই।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মেহেদী হাসান বলেন, দলের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলেও, ঘোষিত কমিটি নিয়ে পাবনার ছাত্রসমাজ হতাশ। কমিটিতে করোনাকালের ত্যাগ, মানুষের পাশে থাকার অবদান মূল্যায়ন করা হয়নি। দলের প্রয়োজনে যারা রাজপথে, শিক্ষাঙ্গণে লড়াই করেছেন তাদেরও গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এটি হতাশাজনক হলেও আসলে বর্তমান বাস্তবতায় কিছুই করার নেই। আগামী দিনের রাজনীতির জন্য এটি খারাপ ফল বয়ে আনবে।
সোমবার (০৭ নভেম্বর) রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে মিজানুর রহমান সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক পদে মীর রবিউল ইসলাম সীমান্তকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একই সাথে পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে ফরিদুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক পদে নুরুল্লাহর নাম অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
বিডি-প্রতিদিন/ এ এস টি