৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৯:৪১

রায়পুরায় উদ্ধার হওয়া দুই লাশের পরিচয় মিলেছে

নরসিংদী প্রতিনিধি

রায়পুরায় উদ্ধার হওয়া দুই লাশের পরিচয় মিলেছে

নরসিংদীর রায়পুরায় কলাবাগান থেকে উদ্ধার হওয়া দুই লাশের পরিচয় মিলেছে। মঙ্গলবার নিহতের স্বজনার এসে থানায় এসে তাদের লাশ শনাক্ত করেন। জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে এ হত্যা হয়েছে বলে দাবী করেছেন নিহতের স্বজনরা। দুজনের স্ত্রীই বলছেন, তাদের স্বামী নিয়মিত জুয়া খেলতেন। খেলাকে কেন্দ্র করেই তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। তবে হত্যাকান্ডের বিষয়য়ে এখনো থানায় মামলা দায়ের হয়নি।

গতকাল সোমবার দুপুরে রায়পুরা আদিয়াবাদ ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের কলাবাগান থেকে ওই দুজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। 
নিহতরা হলেন নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের পাহাড়ফুলদী গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে দ্বীন ইসলাম (৩৪) এবং রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আলাউদ্দীনের ছেলে আলী হোসেন (৪২)। দুজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যার পর তাদের লাশ কলাবাগানে ফেলে রেখেছিল দুর্বৃত্তরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় এক কৃষক ওই বাগানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দুই ব্যক্তির রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশে থাকা কৃষকেরা সেখানে ছুটে আসেন। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি (৯৯৯) কল দিলে দুপুরে রায়পুরা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নিহতদের লাশ উদ্ধার করেন।

নিহত দ্বীন ইসলামের স্ত্রী শাহিদা বেগম বলেন,  আমার স্বামী বেকার ছিল। তাই তিনি নিয়মিত জুয়া খেলতেন। রোববার বিকেলে তার ফোনে একটি ফোন আসলে তিনি  বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। ওই রাতে আর বাড়িতে ফেরেননি। অনেকবার কল দিয়ে ফোন বন্ধ পাচ্ছিলাম। গতকাল দিনভর তার কোনো খোঁজ না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করি। পরে কলাবাগান থেকে দুজনের লাশ পাওয়া গেছে শুনে রায়পুরা থানায় যাই। সেখানে গিয়ে পরনের কাপড় ও ছবি দেখে লাশ শনাক্ত করি।
শাহিদা আরো বলেন, আমি নিশ্চিত, জুয়া খেলার কথা বলে ডেকে নিয়ে সঙ্গের লোকজনই তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।

নিহত আলী হোসেনের স্ত্রী রেনু বেগম বলেন, আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করতেন। দুই সংসারে তার পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে আছে। সুযোগ পেলেই তিনি জুয়া খেলতেন। রবিবার বিকেলে তার ফোনে কল করে কেউ তাকে যেতে বলেন। ওই কল পেয়ে তিনি তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে যান। রাতে বাড়ি না ফেরায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করা হয়। পরে গতকাল রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবি আমাকে দেখান স্বজনেরা। পরে থানায় গিয়ে স্বামীর লাশ শনাক্ত করি।
রেনু আরও বলেন, জুয়া খেলা নিয়ে কারও সঙ্গে তার হয়তো দন্ধ চলছিল। দন্ধের জেরে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নিহত দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এবিষয়ে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো থানায় মামলা দায়ের করেনি। 

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর