প্রতিবার বিশ্বকাপ আসলেই সারা দেশের ন্যায় নেত্রকোনাও ফুটবল জোয়ারে কাঁপে। ফুটবল নিয়ে উন্মাদনারও যেন শেষ নেই। তর্ক বিতর্কসহ নানা ঘটনায় মুখর থাকে পুরো বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে। কিন্তু খেলাধুলার কোনোআয়োজন তেমন চোখে পড়ে না। সংস্কৃতির শহর হিসেবে নেত্রকোনা পরিচিত থাকলেও বর্তমানে খেলাধুলা চর্চার জন্য নেই পর্যাপ্ত মাঠ। তারপরও ফুটবল বিশ্বকাপে কমতি নেই উন্মাদনার। কিন্তু নেত্রকোনায় গেল প্রায় দুই দশক ধরে খেলার মাঠের যেমন অভাব দেখা দিয়েছে তেমনি খেলা থেকে শিশু কিশোরদের বিচ্ছিন্নতাকেও নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন অভিভাবকরা। এতে অভিভাবকরা যেমন আতঙ্কিত এবং চিন্তিত তেমনি সমাজের সুশীল নাগরিকরাও শঙ্কিত।
নেত্রকোনা আবু আব্বাস ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বিতর্ক চর্চা কেন্দ্রের পরিচালক অভিভাবক নাজমুল কবীর সরকার জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশিসহ শিক্ষা কার্যক্রমের সুব্যবস্থা না থাকলে নতুন প্রজন্মকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে। স্কুল কলেজের বাইরে মাঠ এবং সুস্থ বিনোদন কেন্দ্রের অভাব থাকায় বিকালের সময়টা ছেলেরা খেলতে পারে না। খেলায় থাকলে শরীর স্বাস্থ্যও ভালো থাকতো তাদের মানসিক বিকাশও ঘটতো। এই সুযোগ যেহেতু নেই ফলে শিশু কিশোররা মোবাইলের দিকে ঝুঁকে যায়। নানা অনৈতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন গ্রুপে গ্রুপে আড্ডাবাজি, বিভিন্ন গ্যাংয়ে জড়িয়ে পড়ে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে খেলার মাঠগুলো উন্মুক্ত করার পাশাপাশি বাড়াতে হবে মাঠের সংখ্যা।
জেলা সুজনের সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন জনউদ্যোগের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল জানান, এমনিতেই মাঠ নেই। তার উপরে মোক্তারপাড়া একটি মাঠ এবং পুরাতন কালেক্টরেট চত্বরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যাস্ত থাকে। মেলাসহ নানা কর্মসূচিতে বছর জুড়ে মাঠে নানা আয়োজন রাজনৈতিক মিটিং মিছিল চলে। এই শহরে এখন আর খেলাধুলার চর্চা নেই। বিকাশ ঘটছে না ক্রীড়াঙ্গণের। ফুটবলসহ কোনো খেলারই প্রসার ঘটছে না। কোনো পাড়া মহল্লায় খেলার সুযোগ পাচ্ছে না শিশু কিশোর যুবারা। সরকারি-বেসরকারিভাবে ন্যূনতম জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে অন্তত দুটো খেলার মাঠ উন্মুক্ত রাখতে হবে।
নেত্রকোনা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সাইদুর রহমান জানান, আমরা স্টেডিয়াম মাঠে ক্রিকেটের পিচ করার কাজ করছি। এছাড়া মোক্তারপাড়া মাঠটি ফুটবল খেলার জন্য ব্যবস্থা করার কথা ভাবছি।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা