বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে সাধারণ চা শ্রমিকরা। রবিবার সাধারণ চা শ্রমিকদের ব্যানারে শ্রমিকরা শ্রীমঙ্গলে ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘেড়াও করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভে স্থানীয় চা শ্রমিকরা ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট, লংলা, মনু-ধলাই, বালিশিরা ও জুরি ভ্যালির শ্রমিকরা অংশ নেন।
এ সময় ইউনিয়ন কার্যালয়ে বাইরে উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ দুই পক্ষকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে শ্রমিকরা ৭ দিনের আলটিমেটাম দিয়ে ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন। এই সময়ের মধ্য নির্বাচন না দিলে শ্রমিকরা দাবি আদায়ে প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
সিলেট ভ্যালির শ্রমিক জীতেন সবর বলেন, ‘বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এটা এখন অবৈধ কমিটি। এই অবৈধ কমিটি আমরা মানি না।’
চট্টগ্রাম ভ্যালির আবুল হোসেন বলেন, বর্তমান কমিটি অবৈধভাবে কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখল করে রেখেছে। ১৫ তারিখের মধ্যে তারা এই কার্যালয় থেকে বিদায় হয়ে নির্বাচন দিতে হবে। তা না হলে আমরা আন্দোলনে নামবো।’
মনু-ধলাই ভ্যালির গীতা রানী কানু বলেন, চা শ্রমিকরা গত আগস্ট মাসে আন্দোলন করে তাদের মজুরি ১২০ থেকে বাড়িয়ে ১৭০ টাকা করেছে। কিন্তু বর্তমান চা শ্রমিক ইউনিয়ন কমিটি মালিকপক্ষের সাথে চুক্তি করে সেই টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বালিশিরা ভ্যালির সেলিম আহম্মেদ বলেন, সময় মতো নির্বাচন না হওয়াও বর্তমান কমিটি স্বেচ্ছাচারিভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যা সাধারণ শ্রমিকদের কোনো উপকারে আসছে না।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দিলীপ নায়েক জানান, সাধারণ চা শ্রমিকদের নামে দেয়া স্মারকলিপিটি আমি গ্রহণ করেছি। এটি ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে হস্তান্তর করবো।
কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৮ সালে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী তিন বছর অন্তর অন্তর এই নির্বাচন হওয়ার কথা।
কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, আমরা মেয়াদ পূর্তির তিন মাস আগে নির্বাচনের জন্য ডিডিএলকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার থেকে আমাদের নির্বাচনের ফান্ড না দেওয়ায় নির্বাচন হয়নি। এখন আমরা গঠনতন্ত্র সংশোধন করেছি। সরকার এবং আমাদের নিজের ফান্ড থেকে টাকা দিয়ে নির্বাচনী ব্যয় মিটানো হবে। আশা করছি বকেয়া মজুরির বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে গেলেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (চ.দ.) ট্রেড ইউনিয়ন মাসুদা সুলতানা বলেন, আমরা নির্বাচনী কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন করার জন্য গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়েছে। একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও একটি পর্যবেক্ষণ কমিটিও করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ফান্ডে টাকা জমা হয়ে গেছে। অচিরেই এই নির্বাচন হয়ে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই