বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ৫ বছরের শিশু রোমানকে হত্যার পর গুম করার দায়ে দু’জনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন-শাজাহানপুরের ক্ষুদ্র কুষ্টিয়া গ্রামের আব্দুল খালেক ও চৌপিনগর দক্ষিণ পাড়ার আব্দুল মাজেদ। রায়ের সময় এই দুইজন পলাতক ছিলেন। রায়ে ক্ষুদ্র কুষ্টিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাককে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে। তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায় ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চৌপিনগর এলাকার মাহবুর রহমানের ছেলে রোমানকে হত্যার পর গুম করে আসামিরা। পরে ওই বছরের ২৮ আগস্ট একই এলাকার খলিল নামে একজনের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে রোমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জহুরুল ইসলাম জানান, রোমানের দাদার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসামি খালেক ও মাজেদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। এছাড়া নিহতের পরিবারের সঙ্গে তাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এসবের প্রতিশোধ নিতে আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদ শিশু রোমানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে রোমানকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসেন। এ কাজের জন্য আব্দুর রাজ্জাককে ৮ হাজার টাকা দেন খালেক ও মাজেদ। খালেক ও মাজেদ দুজন মিলে রোমানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ওই শিশুকে এলাকার এক প্রতিবেশির বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে গুম করে রাখেন।
রোমান নিখোঁজের পর খালেকের আচরণে সন্দেহ হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনা স্বীকার করেন। এ সময় তিনি মাজেদ ও রাজ্জাকের সম্পৃক্ততা জানান। পরে তাদের দেয়া তথ্যে রোমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মাহবুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন।
তিনি আরো জানান, আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিও দিয়েছেন। সোমবার বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আর আব্দুর রাজ্জাককে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়। তবে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। এরপর থেকে আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদ পলাতক রয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই