দেশের অক্সিজেনের অফুরন্ত ভাণ্ডার সুন্দরবন মায়ের মত। সুন্দরবন সন্নিহিত জেলাগুলোকে ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করলেও বিশ্ব ঐহিত্য এই ম্যানগ্রোভ বনের জীববৈচিত্র্য এখন অস্তিস্ব সংকটে পড়েছে।
ফারাক্কা বাঁধের কারণে উজান থেকে মিঠা পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় তীব্র লবণাক্ততার কারণে সুন্দরী গাছ মরে যাচ্ছে। বাগেরহাটের চাঁদপাই রেঞ্জেই গত ৩০ বছরে ৭৯ ভাগ সুন্দরী গাছ কমেছে। দখল ও নদী ভাঙনে গত ১০০ বছরে সুন্দরবনের আয়তন কমেছে ৪৫১ বর্গ কিলোমিটার। সুন্দরবনের নদ-নদীর ১৭ প্রজাতির মাছের দেহে মাইক্রো প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। প্রতিনিয়ত সুন্দরবনের ইকো সিস্টেমের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষ দিয়ে অভয়াশ্রমসহ খালে মাছ মারা হচ্ছে, চলছে হরিণ শিকার। সুন্দরবন সুরক্ষায় বন্ধ করতে হবে এসব বনবিনাশী কর্মকাণ্ড। সরকারে সদিচ্ছার কঠোর বাস্তবায়ন হলেই কেবল রক্ষা করা সম্ভব সুন্দরবনের প্রানপ্রকৃতি। মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাটে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালন অনুষ্ঠানে বক্তারা দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য তুলে ধরে এসব শঙ্কার কথা জানান।
২০০১ সাল থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসটিকে সুন্দরবন সন্নিহিত জেলার মানুষ ‘সুন্দরবন দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
সুন্দরবনকে ভালোবাসুন, সুন্দরবন সুরক্ষায় এগিয়ে আসুন এই আহবান জানিয়ে দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব ও সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনঃরায় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। পরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম ফরাজি।
বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি নীহার রঞ্জন সাহা’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার আব্দুল বাকি, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শেখ আহসানুল করিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আলী আকবর টুটুল, সাংবাদিক শেখ আছাদুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নকীব সিরাজুল হক, শেখ আজমল হোসেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল