২৯ মার্চ, ২০২৩ ১৭:১৬

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রোজাদারদের অপেক্ষায় থাকেন মেয়র স্বপন মিয়াজী

ফেনী প্রতিনিধি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রোজাদারদের
অপেক্ষায় থাকেন মেয়র স্বপন মিয়াজী

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে রোজাদারের অপেক্ষায় থাকেন পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। ইফতারের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন শুধু এ বছরই নয়, মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই গত পাঁচ বছর তিনি এ আয়োজন চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি বছর রোজায় মহাসড়কের রোজাদারদের জন্য থাকছে তার এ ব্যক্তিগত আয়োজন। চলতি বছর যোগ হয়েছে ইফতারের পর চা-নাস্তার। মেয়রের মহিপালস্থ কার্যালয়ের সামনে একটি ঘরে করা হয়েছে এ আয়োজন। যে কেউ ইচ্ছে করলেই বিনামূল্যে এখানে এসে চা-নাস্তা করে যেতে পারেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন ইফতারের সময় শুরু হওয়ার আগে তিনি নিজে ও তার সেচ্ছাসেবক দলের সদস্যরা মহাসড়কের দুই পাশে ইফতার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী ছয়লেন উড়াল সেতুর দুই পাশে রোজাদারদের জন্য অপেক্ষা করেন মেয়রের স্বেচ্ছাসেবক টিম। সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ির চালক ও যাত্রীদের গাড়ি থামিয়ে তাদের হাতে তুলে দেন ইফতার। প্রতিদিন এখানেই বিতরণ হয় পাঁচশত প্যাকেট ইফতার। আরো প্রায় তিনশ প্যাকেট ইফতার বিতরণ হয় বিভিন্ন মসজিদ, এতিমখানা ও এলাকার অসহায়-গরিবদের মধ্যে। 

মেয়রের ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিদিন এখান ৬ থেকে ৭শ রোজাদারের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হচ্ছে। ধাপে ধাপে ইফতার বিতরণ দাঁড়ায় এক হাজার থেকে ১২শ প্যাকেটে। একইসঙ্গে পৌর প্রাঙ্গণে রিকশাচালক ও দিনমজুরদের জন্যও থাকে তার এমন আয়োজন। পাশাপাশি তার এলাকা ও বিভিন্ন মসজিদে বিতরণ করা হয় এসব ইফতার। 
মেয়র জানান, প্রতিি বছরের মতো এবছরও তার এ আয়োজন শুরু হয়েছে প্রথম রোজা থেকে। অব্যাহত থাকবে শেষ রোজা পর্যন্ত। রোজাদারদের ইফতার করানো সওয়াবের কাজ। সেই চিন্তা থেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে তার এ ক্ষুদ্র আয়োজন। তিনি বলেন, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে রোজাদারদের ইফতার করান অনেক ব্যক্তি। আমাদের দেশের অর্থশালীরা তার এ আয়োজন দেখে নিজ নিজ এলাকায় এভাবে জনসেবায় এগিয়ে আসবেন এমনটিই তার প্রত্যাশা। 

প্রতিদিন এ পথে অসংখ্য যানবাহন ও পথচারী চলাচল করে থাকে। মহাসড়কে রোজাদার গাড়িচালক ও পথচারিরা ইফতার করতে অসুবিধায় পড়েন। তাদের কথা চিন্তা করে বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইফতারের আয়োজন করে আসছেন। করোনাকালীন সময় যখন লকডাউন চলছিল তখন রোজাদারদের খুবই কষ্ট হচ্ছিল। তখন থেকেই পুরো রোজার মাস ইফতার বিতরণ শুরু করি। তারপর থেকে আর একদিনের জন্যও বন্ধ করেনি। যে কেউ চাইলে আমার কার্যালয়ের সামনে বসে ইফতার করতে পারবে। যারা নিতে চায় তাদের দেওয়া হচ্ছে প্যাকেট।

মেয়র স্বপন মিয়াজী বলেন, সমাজের সব বিত্তবানরা যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসেন তাহলে কোনো রোজাদার ইফতারের সময় অভুক্ত থাকবে না।
স্থানীয়রা জানান, মেয়র হওয়ার আগে থেকেই তিনি মহাসড়কে যাতায়াতকারী রোজাদারদের ইফতার বিতরণ করতেন। এছাড়া পৌর এলাকার কর্মহীন মানুষদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তিনি। শহরের সবকটি মসজিদের সামনে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার জন্য পানির ট্যাংকের ব্যবস্থাও করেছেন মেয়র।
ইফতার বিতরণের দায়িত্বে থাকা পৌর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাঈন উদ্দিন সুমন বলেন, মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর অর্থায়নে প্রতিদিন রোজাদার গাড়িচালক ও পথচারীদের মধ্যে ইফতারি বিতরণ করা হয়। সড়কে যাতায়াতকারীরা মেয়রের এ ইফতার পেয়ে অনেক উপকৃত হচ্ছেন।
মহাসড়কের ট্রাকচালক জসিম বলেন, মহাসড়কের পাশে বেশিরভাগ মানুষ ব্যবসায় মগ্ন থাকে। এক গ্লাস পানিও বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। সেখানে ভিন্ন চিত্র ফেনীর মহিপালের এ জায়গায়। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এখানে রোজাদারদের ইফতার করানো হয়।
যাত্রীবাহী পরিবহণের যাত্রীরা বলেন, এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। যাত্রা অবস্থায় থাকা মানুষগুলো ইফতার নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়েন। ফেনীর মেয়রের এমন উদ্যোগের কারণে সেসব মানুষগুলো উপকৃত হচ্ছেন।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর