ঈদুল ফিতরে আগে আগে এক সময় ধনী মানুষরা যাকাতের শাড়ি-লুঙ্গি কেনার জন্য পাইকারি দোকানগুলোতে ভিড় করতেন। এবার কিছুটা ব্যতিক্রম। ঈদে যাকাতের কাপড়ে আগ্রহ কমেছে রংপুরের ধনীদের। প্রতিবছর ২০ রমজানের মধ্যে রংপুরে কয়েক কোটি টাকার যাকাতের কাপড় বিক্রি হলেও এবার অনেক ব্যবসায়ী যাকাতের কাপড় নিয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছেন। বিগত বছরগুলোর তুলনায় ১০ ভাগের একভাগও বিক্রি হয়নি যাকাতের কাপড়। এর কারণ হিসেবে অনেকে অনেকে মনে করছেন শাড়ি- লুঙ্গির চেয়ে নগদ টাকায় আগ্রহ বেশি গরীব মানুষদের। তাই ধনী ব্যক্তিরাও কাপড়ের পরিবর্তে যাকাত হিসেবে নগদ টাকা দিতে আগ্রহ বোধ করছেন। আবার অনেকে মনে করছেন বিভিন্ন কারণে আয় কমে যাওয়ায় ধনীরা যাকাতের কাপড় ক্রয়ে অনিহা প্রকাশ করছেন। ফলে এবার এ অঞ্চলের দুই লাখ দরিদ্র মানুষ ঈদে যাকাতের নতুন কাপড় থেকে বঞ্চিত হবেন এমনটাই শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
রংপুর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্স, গোল্ডেন টাওয়ার বিপণী বিতান, রজনীগন্ধা, শাহ আমানত, সিটি প্লাজা, মতি প্লাজাজা বিপনি বিতানগুলো ছাড়া বড় বড় কাপড়ের দোকানে প্রতিবছর ১০/১২ কোটি টাকার যাকাতের কাপড় বিক্রি হত। এবারের চিত্র একেবারে ভিন্ন। কোন দোকানেই যাকাতের কাপড়ের বেচাকেনা নেই বললেই চলে।
জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্স-এর ব্যবসায়ী আবিদ হোসেন বলেন, ঈদ উপলক্ষে এ মার্কেটে শুধু রংপুরের মানুষ নয় দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারি, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, বগুড়া, গাইবান্ধার মানুষ ভিড় করত। যাকাতের কাপড়ও বিক্রি হত বেশি। কিন্তু এবার বাইরের কোন ক্রেতা নেই। পাশাপাশি যাকাতের কাপড়ের বিক্রিও কম।
নগরীর জিএলরায় রোডের শেখ ব্রাদার্সের মালিক সামছুজোহা ডিএম বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি প্রতিবছর তার কাছ থেকে কয়েকশ পিছ যাকাতের কাপড় কিনতেন। এবার ওই জনপ্রতিনিধি কাপড়ের পরিবর্তে গরীব-দুঃখিদের নগদ টাকা দিবেন। তাই এবার তার আগাম আনা কয়েকশ পিছ শাড়ি- লুঙ্গি অবিক্রিত থেকে যাবে বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করছেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর যাকাতের কাপড় যে পরিমাণ বিক্রি হত এবার তার ১০ ভাগের একভাগে নেমে এসেছে। বিক্রি নেই বলইে চলে।
এ প্রসঙ্গে রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন জানান, শাড়ি- লুঙ্গি চেয়ে নগদ ঠাকা দিতে অনেকে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। এছাড়া আয় কমে যাওয়াতে যাকাতের কাপড় দিতে আগ্রহ প্রকাশ করছে না অনেক ধনী ব্যক্তি।
বিডি প্রতিদিন/এএ