পাবনায় ইউটিউব দেখে অস্ত্র তৈরি শুরু করে একটি চক্র। সেই অস্ত্র ব্যবহৃত হতো হত্যা ও চাঁদাবাজির কাজে। এর পাশাপাশি পরিচালনা করা হতো অস্ত্র ব্যবসা। এমন একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে পাবনা জেলা পুলিশ। পাবনার ঈশ্বরদীর ছাত্রলীগ নেতা মনা হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এসব তথ্য জানতে পারে পুলিশ। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিরাই মূলত এই চক্রের সদস্য।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।
আসামিদের গ্রেফতারের সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুটি ওয়ান শুটার গান, একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি প্রাইভেটকার ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। একই সাথে ইজিবাইক চুরির পৃথক আরেকটি ঘটনায় চুরিকৃত ৭টি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানানো হয় প্রেস ব্রিফিংয়ে।
ঈশ্বরদী নতুন রুপপুরের ইউনুসের ছেলে মো. মানিক (৩৬), একই উপজেলার দিয়ার সাহাপুরের মহিদুলের ছেলে ফসিউল আলম অনিক (২৭), নতুন রুপপুরের আতিয়ারের ছেলে চমন (৩৮), চর সাহাপুরের আক্তার সরদারে ছেলে শাহিন সরদার (২৮) ও নতুন রুপপুরের আজিজের ছেলে রাজিবসহ (৩০) মনা হত্যাকাণ্ড ও অস্ত্র তৈরি কাজে জড়িত ১২ জন আসামিকে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অন্যদিকে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধোপাদহ গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে মঞ্জিল হোসেন জনি (২৬), করমজা ঋষিপাড়ার মৃত একাব্বর আলীর ছেলে রিপন হোসেন (৩৭) ও একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলাম ওরফে ডুবার সাইদুলসহ (২২) পাঁচজনকে রবিবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী জানান, গত জুন মাসের ১৭ তারিখ রাতে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের এমপি মার্কেটে গুলি করে ছাত্রলীগ নেতা মনাকে হত্যা করা হয়। এরপরই হত্যার মূলহোতা অনিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য মতে ও গোয়েন্দা তৎপরতায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মানিকসহ আরও ৯ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় অনিক ও মানিকের ঈশ্বরদীর জিগাতলার ভাড়া বাসায় অভিযান চালালে একটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান মেলে। যেখানে অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরি করা হতো। ওই অস্ত্রগুলোই মূলত কিলিং মিশনে তারা ব্যবহার করতো। এর পাশাপাশি বিক্রিও করতো।
পুলিশ সুপার আরও জানান, অস্ত্র কারখানার সাথে জড়িতদের কেউ ছিলেন লেদ ওয়ার্কশপ কাজে নিয়োজিত আবার কেউ ছিলেন অন্যান্য পেশায়। তবে তারা ইউটিউব দেখেই প্রাথমিকভাবে অস্ত্র তৈরি শুরু করেন। এদের অধিকাংশই শিক্ষিত এবং স্থানীয়ভাবে পরিচিত। থানায় এদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) জিয়াউর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ডিএম হাসিবুল বেনজির প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই