মাগুরার দুটি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এই খবরে জেলায় এখন চলছে নানা আলোচনা। তবে মাগুরার যে কোনো আসনেই মনোনয়ন প্রশ্নেই অনেক জটিল পরিস্থিতি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সাকিবকে।
প্রথমত মাগুরা-১ আসনে যিনি বর্তমান এমপি সেই সাইফুজ্জামান শিখর গত ৫ বছরে জেলার ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি সমাজিক, রাজনৈতিক নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নির্বাচনী এলাকায় মজবুত একটি অবস্থান তৈরি করেছেন। তার রয়েছে ব্যাপক সমর্থক গোষ্ঠী ও সাংগঠনিক অবস্থান। সাইফুজ্জামান শিখর জেলার ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার বাবা মরহুম আছাদুজ্জামান ছিলেন শালিখা-মহম্মদপুর নির্বাচনী এলাকার ৪ বারের নির্বাচিত এমপি। সেই পরিবারের সন্তান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব থাকার ১০ বছরসহ গত ১৫ বছরে খুব সহজে তৃণমূল মানুষের কাছে যেতে পেরেছেন সাইফুজ্জামান শিখর।
অন্যদিকে মাগুরার-২ আসন থেকে চারবার নির্বাচিত এমপি বীরেন শিকদার উন্নয়নের পাশাপাশি নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এলাকায় বেশ জনপ্রিয়। তার একটি ব্যাপক সমর্থক গোষ্ঠী তৃণমূল থেকে শুরু করে সর্বত্র বিরাজমান। এই দুই এমপির জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নের্তৃবৃন্দসহ সমর্থক গোষ্ঠীর কাছে নিরঙ্কুশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
আর সাকিব আল হাসান ক্রিকেট অঙ্গনে অনেক জনপ্রিয় হলেও জেলার রাজনীতিতে একেবারেই নতুন মুখ।
জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, এ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী মাগুরা-১ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ী এমপি জেলা আওায়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, সাবেক সংসদ সদস্য রেডক্রিসেন্ট চেয়ারম্যান সাবেক সেনা কর্মকর্তা এ টি এম আব্দুল ওয়াহ্হাব, এস এম শফিকুল ইলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রানা আমীর ওসমান, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি মিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমত আরা হ্যাপী দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
মাগুরা-২ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ী এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীরেন শিকদার, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্মল চ্যাটার্জী, জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ওহিদুর রহমান টিপু, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য কবিরুজ্জামান, সাবেক সেনা কর্মকর্তা কাজী শরিফ উদ্দিন, প্রকৌশলী নুরুজ্জামান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আইয়ুব বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সৈকতুজ্জামান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পরিবেশবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য প্রকৌশলী শেখ নবীব আলী, অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, সাংবাদিক শাহিদুল হাসান খোকন, ফয়জুর রহমান চৌধুরী, আব্বাস আলী কৈরাশী এ ১৪ জন দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ফাত্তাহ বলেন, ‘দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই একটি কথা বলে থাকেন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের পরীক্ষিত, ত্যাগী ও পারিবারিক ঐতিহ্যসমৃদ্ধ ব্যক্তিদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে। আমরা সেটাই বিশ্বাস করি। বর্তমানে যারা এমপি আছেন তারা বিগত সময়ে অনেক ভালো কাজ করেছেন। মানুষের খুব কাছাকাছি থেকেছেন। নিজ নিজ এলাকায় তাদের অনেক সুনাম ও সমর্থন রয়েছে। এমনকি সাংগঠনিক পর্যায়ে দলের জন্য তারা অনেক কাজ করেছেন। তৃণমূলের মানুষ সবসময় যাদের সহজে কাছে পেয়েছেন কিংবা পান সবসময় তাদেরই ভোট দিতে পছন্দ করেন, এটাই প্রকৃত বাস্তবতা। তবু আমরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুন্ডু বলেন, ‘মনোনয়নের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এখানে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ