নাটোরের নলডাঙ্গায় স্কুলছাত্রী মরিয়ম খাতুন লাবনীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে আলোচিত সিরিয়াল কিলার আনোয়ার হোসেন ওরফে বাবু শেখ ওরফে কালু শেখ (৪৯) ও তার সহযোগী রইচ উদ্দিন সরদারকে (৬২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করে ভিকটিমের পরিবারকে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। এ মামলায় পুলিশের দেওয়া চার্জশিটে স্থানীয় পাঁচজনের সম্পৃক্ততা না থাকায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আনোয়ার হোসেন ওরফে বাবু শেখ নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার হরিসপুর গ্রামের মৃত জাহের আলী শেখের ছেলে ও রইচ উদ্দিন নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা মোল্লাপাড়া গ্রামের মৃত হাজি সামসুদ্দিনের ছেলে।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- একই এলাকার মো. সোহাগ, মো. রাকিব হোসেন, মো. আলামিন, মো. জিয়ারুল ওরফে জিয়া ও মো. জামাল হোসেন।
নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ২০১৪ সালের ৬ মে রাতে নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে স্কুলছাত্রী মরিয়ম খাতুন লাবনীর ঘরে মই বেয়ে ঢোকে দুর্বৃত্তরা। তারা লাবনীকে ধর্ষণের পর বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে পরিবারের সদস্যরা ঘরে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। এ অবস্থায় তদন্ত শেষে পুলিশ স্থানীয় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।
২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর নাটোর রেল স্টেশন থেকে বাবু শেখ আটক হওয়ার পর বেরিয়ে আসে নাটোরের বিভিন্ন স্থানে ৮ নারীকে ধর্ষণ ও হত্যাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১১ নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার আসল রহস্য। পুলিশের কাছে এসব ঘটনার কথা স্বীকার করেছিল বাবু শেখ। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত আজ এ রায় দেন। এ মামলায় পুলিশের দেওয়া চার্জশিটে স্থানীয় পাঁচজনের সম্পৃক্ততা না থাকায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন