ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলতি আমন মৌসুমে জমে উঠেছে ধানের চারা বিক্রির হাট। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বাজারের পাশে এই ধানের চারার হাটটি বসেছে।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকসহ আশপাশ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা আসে এই বাজারে ধানের চারা কিনতে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পদচারনায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মুখরিত থাকে এই হাটটি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, প্রতিদিন এই বাজারে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার চারা বিক্রি হয়। এই বছর এই হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার চারা বিক্রি হবে।
সরজমিনে ও স্থানীয়রা জানায়, নন্দনপুর এলাকার মৌসুমী ধানের চারার হাটটি বেশ পুরাতন। আমন মৌসুমে চারার হাটটি জমে উঠে।
প্রতিদিন ভোরে বিক্রেতারা ধানের চারা নিয়ে আসেন বাজারে। চারা আটি হিসেবে বিক্রি করা হয়। ছোট প্রতি আটি ৮০ টাকা থেকে ১২০ এবং বড় আটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন জাতের ধানের চারার মধ্যে বিআর-২২, খাসা, নাজির ও বিনা ধান-৭ অন্যতম। জেলাসহ আশপাশ এলাকার পাইকাররা এই বাজার থেকে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
চারা কিনতে আসা জেলার কসবা উপজেলার ক্রেতা শাহআলম বলেন, ৬ কানি জমির জন্য এই বাজার থেকে চারা কিনবেন। আজ দেড় কানি জমির জন্য ২৮২০ টাকা দিয়ে ২৮ আটি বিআর-২২ জাতের চারা কিনেছেন।
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা থেকে চারা কিনতে আসা কৃষক সুজন চৌধুরী বলেন, চারার দাম নাগালের মধ্যে। ছোট চারার প্রতি আটি ৮০ টাকা থেকে ১২০ এবং বড় চারার আটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। হাটটি মহাসড়কের পাশে হওয়ায় খুব সহজেই যাতায়ত করা যায়।
হাটে চারা বিক্রি করতে আসা সদর উপজেলার চান্দিয়ারা গ্রামের খোরশেদ ইসলাম বলেন, এবার ২ কানি জমিতে ধানের চারা করেছি। চারা আটি ৮০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছি। এই হাটে বিআর-২২, খাসা, বিনা ধান-৭সহ বিভিন্ন জাতের ধানের চারা বিক্রি হয়। বিক্রেতা সদর উপজেলার সুহিলপুরের কাঞ্চন দাস বলেন, আমন মৌসুমে হাটটি বেশ জম জমাট থাকে। দেড় কানি জমিতে চারার বীজতলা করেছি। বীজতলা করতে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। জমিতেই এই চারা পাইকারের কাছে ৪৫ হাজার টাকা বিক্রি করে দিয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মুন্সী তোফায়েল হোসেন বলেন, নন্দনপুরের এই চারার হাটটি বেশ পুরাতন। এই হাট থেকে জেলার কৃষকদের পাশাপাশি হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও নরসিংদী জেলার কৃষকরা এসে চাহিদা অনুযায়ী চারা কিনে নিয়ে যান। এই বাজারে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার চারা বিক্রি হয়ে থাকে। এই বছর প্রায় ২ কোটি টাকার চারা বিক্রি হবে বলে আশা করি।
বিডি প্রতিদিন/এএম