লেবাননের বৈরুতে ইসরাইলি বিমান হামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার নিজাম উদ্দিন (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার (২ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় বৈরুতের হাজমিয়ে এলাকায় তার মৃত্যু হয়। নিজাম উদ্দিন উপজেলার খাড়েরা গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। নিজামের মৃত্যুর খবরে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দ্রুত তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি নিহতের স্বজনদের।
পরিবারের লোকজন জানান, ২০০৪ সালে তার বাবা মারা যাওয়ার পর ভাই বোনদের কাছেই বড় হয়েছেন নিজাম। কাগজপত্র জটিলতার কারণে সেখানে তিনি অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। যখন যে কাজ পেতেন সেই কাজ করতেন। একদিনের জন্যও দেশে আসতে পারেননি। এরই মাঝে তার মা ও এক বোন মারা যায়।
বড় বোন সায়েরা বেগম জানান, পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে নিজাম উদ্দিন ছিলো সবার ছোট। অভাব-অনটনের সংসারে ছিলো কষ্টের জীবন-যাপন। চাকুরির জন্য নিজাম ঢাকায় চলে যায়। যে টাকা বেতন পেত তা দিয়ে চলা যেত না। তখন সে আমাকে বলেছে, আপা তুমি ঋণ করে হলেও আমাকে বিদেশ পাঠাও। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ করে তাকে লেবানন পাঠিয়েছিলাম।
নিজামের ছোট বোন পারুল বেগম জানান, লেবানন যাওয়ার পর বৈধ কাগজপত্র না থাকায় নিজাম দেশে ফিরতে পারেনি। পরিবার থেকে বিয়ের কথা বললে সে বলতো আগে টাকা উপার্জন করে বাড়ির পরিবেশ ঠিক করে নেই। তারপর দেশে এসে বিয়ে করবে। গত শনিবার লেবাননের বৈরুতে একটি হোটেলে ইসরাইলের বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে আমার ভাইয়ের সকল স্বপ্ন-বলে বিলাপ করতে থাকেন তিনি। রাতে তার বন্ধুর মাধ্যমে মৃত্যুর খবর আসে। আদরের ছোট ভাই নিজামের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার জানান, ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই নিজামের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ