বরগুনায় তিন বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে।
রবিবার দুপুরে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র বিচারক ও জেলা জজ মো. মশিউর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী গ্রামের মিম আবাসনের মৃত লাল মিয়ার ছেলে মো. শাহীন (৩৫)। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, একই আবাসনের বাসিন্দা ভুক্তভোগীর মা মোসা. রুমি বেগম বরগুনা থানায় ২০২২ সালের ২০ জুন অভিযোগ করেন, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শাহীন ও তারা একই আবাসনে বসবাস করতেন। শাহীনের স্ত্রী দুই বছর আগে বিদেশে চলে যায়। বাদীর তিন বছরের মেয়েকে শাহীন আদর করে দোকানে নিয়ে প্রায় সময় চকলেট কিনে দিতো। বাদী কিছু মনে করতো না। ঘটনার দিন ২০২২ সালের ১৯ জুন বিকাল সোয়া তিনটায় শাহীন শিশুটিকে ডেউয়া ফল দেওয়ার কথা বলে তার ঘরে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর শিশুটি পা ফাঁক করে কাঁদতে কাঁদতে শাহীনের ঘর থেকে বের হয়। কান্নার কারণ জানতে চাইলে শিশুটি জানায়, ‘শাহীন ভাইয়া আমাকে ব্যথা দিয়েছে।’
এরপর রুমি বেগম শিশুটির পরিহিত পাজামা খুলে দেখতে পান তার মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে। ধর্ষণের আলামত শিশুটির শরীরে ছিল। এ সময় তিনি চিৎকার দিলে শাহীন দ্রুত পালিয়ে যায়।
বাদী ২০ জুন বরগুনা থানায় শাহীনকে আসামি করে মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপুলিশ পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল নোমান ২০২৩ সালের ২৮ জুন শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। এর আগে ভুক্তভোগী শিশুর ডাক্তারি ও ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। বাদী পক্ষে ট্রাইব্যুনালে ৬ জন সাক্ষ্য দেয়।
বাদী বলেন, আমি রায়ে খুশি হয়েছি। তবে আমার মেয়ের কলঙ্ক কোনোদিন মুছে যাবে না। সাজাপ্রাপ্ত আসামি আদালতের বারান্দায় বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে আমি আপিল করব।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হয়েছি। আজকাল শিশুরা বিভিন্ন সময় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়। অপরাধীর সাজা পাওয়ার বার্তা সকল জায়গায় পৌঁছালে অপরাধ কমে আসবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল