ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় নতুন বইয়ের ঘ্রাণ পায়নি ১৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২০টি কিন্ডারগার্টেনের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীরা। উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে পাঠ্যবই ছাড়াই ক্লাস করছে শিশুরা।
বছর ঘুরে নতুন শ্রেণিতে উঠেও নতুন বই প্রাপ্তির আনন্দ বঞ্চিত শিশুরা ক্লাসে বসে শুধু শিক্ষকের মুখে আলোচনা শুনে পাঠ নিচ্ছেন। নতুন বইয়ের অভাবে এ বছর এখনো বাড়িতে অধ্যায়ন করার কোনও সুযোগ হয়নি শিক্ষার্থীদের। ফলে স্কুলে বই ছাড়া উৎসব বিমুখ পাঠদানে উপজেলার শিশুদের মধ্যে অনাগ্রহতা দেখা দিয়েছে বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগন জানিয়েছে।
উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের হাওলাদার ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বই ছাড়াই ক্লাসের শিশুদের পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা মুখে মুখে কোমলমতি শিশুদের মৌলিক শিক্ষা দিয়ে চলেছেন।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এন ইউ প্রিন্স বলেন, এ বছর এখনও আমরা কোনও বই পাইনি। তবুও কিছু পুরাতন বই দিয়ে আমরা ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি। নতুন বই না থাকায় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক কম। যদিও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে কিন্তু পাঠগ্রহণে তাদের আগ্রহ কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একইসাথে আনন্দময় ও উপভোগ্য হচ্ছে না শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা।
উপজেলা সদরের সদরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া জিতু বলেন, নতুন বই না হলে স্কুলে আসতে আনন্দ লাগে না। নতুন বইয়ের অপেক্ষায় আছি। পুরান ক্যালেন্ডার রেডি রেখেছি। নতুন বই হাতে পেলেই ক্যালেন্ডার দিয়ে বই গুলো মলাট বাঁধাবো।
অভিভাবক মাহবুব হোসেন অনিক বলেন, কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখনো নতুন বই হাতে না পাওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষাব্যবস্থা ঠিক রাখতে নতুন বই দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহন করা জরুরি।
উপজেলার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াহিদ খান বলেন, উপজেলায় রয়েছে ১৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া প্রায় ২০টি কেজি স্কুল রয়েছে। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে পুরাতন কিছু বই সংগ্রহ করে কোনওরকম ঢিলেঢালা ভাবে ক্লাস করছেন।
সদরপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫টি মাদ্রাসার প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীরাও এখনও সব বই পায়নি।
তিনি আরও জানান, আমরা ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৩টি, ৭ম শ্রেনীর ৩টি, ৮ম শ্রেণির ২টি, ও ১০ম শ্রেণির ৩টি বিষয়ের বই পেয়েছি। এসব বই ইতিমধ্যে আমরা বিদ্যালয় গুলোতে বিতরণ করেছি। মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বাকি বইয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ