বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় না থাকলেও বেগম জিয়া, তার পরিবারসহ তৃণমূলের কোনো নেতাকর্মীকে পালাতে হয়নি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ প্রতিটি নেতাকর্মী হৃদয়ে ধারণ করায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের স্টিম রোলার চালালেও কোনো নেতা দেশ ছাড়েনি। কিন্তু হাসিনাসহ সকল ফ্যাসিস্টদের পালাতে হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যার পর শহরের পৌর ভাসানী মিলনায়তনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, হাসিনা এতটাই নিষ্ঠুর ছিলেন যে, আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অসুস্থ অবস্থায় থাকাকালে নানা কটূক্তি করেছেন।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। জিয়াউর রহমান ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল উন্মুক্ত এমনকি আওয়ামী লীগকে অনুমতি দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। হিন্দু-মুসলিমসহ সকল গোত্রের মানুষের মধ্যে সাম্যতা প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাত্র সাড়ে তিন বছর ক্ষমতা থেকে তিনি গোটা বিশ্বে বাংলাদেশের মানুষকে রাজনৈতিক পরিচয় উপহার দিয়েছেন তা হলো—বাংলাদেশি জাতীয়বাদী।
এই জাতীয়তাবাদে মুসলিম, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ও চাকমা সবাই বাংলাদেশি। দেশের মানুষের বিদেশে কর্মসংস্থান ও গার্মেন্টস সেক্টরের পোশাক রপ্তানির ব্যবস্থা করেছেন শহীদ জিয়াউর রহমান। আরাফাত ময়দানে গাছ লাগিয়ে আরাফাত ময়দানকে সবুজ শ্যামল করে তুলেছেন, যা আরববাসী কল্পনাও করতে পারেনি।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের স্থপতি ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। গত ১৬ বছরে সেই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী মুক্তভাবে পালন করতে পারিনি। শহীদ জিয়া একজন সৈনিক, তিনি শুধু স্বাধীনতার ঘোষকই ছিলেন না—আমি মনে করি শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে পাল্টে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একটি দল উপহার দিয়েছেন তা হলো—বিএনপি। যা মানুষের হৃদয়ের দল। নির্বাচনে গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও বিএনপি জয়লাভ করে। তিনি বলেন, জিয়াউর সৈনিক ছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে রাজনৈতিক বাপে পরিণত হয়েছিলেন।
তিনি ওলামাদের উদ্দেশ্যে বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু সৈনিক বা প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তিনি একজন খাঁটি ও ইমানদার মুসলমান ছিলেন। তিনি বলেন, অহংকারের মালিক একমাত্র আল্লাহ। কিন্তু হাসিনা অহংকারী করেছিলেন, যেমন করেছিলেন ফেরাউন। আল্লাহ অহংকারীকে ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। তাই ফেরাউনকে ডুবিয়েছে, আর হাসিনার কপালে রান্না করা খাবারও জোটেনি। তাকে আল্লাহর হুকুমে জনগণের তোপের মুখে পালাতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি গণভবন সংস্কারের দরকার নেই। এটা রেখে দিলে বিশ্বের গণভবন দেখে বুঝবে হাসিনা কতটাই অত্যাচারী ছিল যে তাকে আল্লাহর হুকুমে জনগণ উৎখাত করেছে। আলোচনা সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত ও বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। সভায় জেলার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম-খতিবসহ দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান দুলাল, ভিপি অমরকৃষ্ণ দাস, নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, যুগ্ম সম্পাদক ভিপি শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ সুইট, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব টি. এম শাহাদত হোসেন ঠান্ডু, শহর বিএনপির সভাপতি সেলিম ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক মুন্সী জাহিদ আলম, যুবদলের সভাপতি মির্জা বাবু, সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ, ছাত্রদলের সভাপতি জোনায়েদ আহমেদ সবুজ, সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম সেরাজসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল