উপকূলীয় জেলা বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। জানুয়ারি থেকে জুন; এই ছয় মাসেই জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩,১১৮ জন। প্রতিদিনই বাড়ছে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা। ডেঙ্গু প্রতিরোধে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বরগুনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চাপ সামলাতে পারছেন না চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে আইসিইউ (ICU) শয্যার অভাবে। দীর্ঘদিন ধরে বরগুনা হাসপাতালের জন্য আইসিইউ দাবী জানানো হলেও এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।
এ কারণে গুরুতর অবস্থায় থাকা রোগীদের বরগুনা থেকে বরিশাল কিংবা ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে উন্নত চিকিৎসার জন্য। এতে করে সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো এক শিশু, এক সরকারি কর্মকর্তা, এক ব্যবসায়ীসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সরকারি তালিকায় তাদের নাম না থাকায় মৃত্যু পরিসংখ্যানে তারতম্য দেখা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ছয় মাসে বরগুনায় ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। তবে বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা ১৫-এর বেশি।
স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সহ-সভাপতি মনির কামাল বলেন, 'ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সঠিক হিসাব রাখা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব। অথচ এখানে গাফিলতির কারণে অনেকের নামই তালিকায় নেই। পরবর্তীতে মৃত্যুসনদ পেতে গিয়ে পরিবারগুলোকেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করছেন, তাদের মাধ্যমে আক্রান্তদের তথ্য সংগ্রহ করা খুব সহজ। কিন্তু তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে না।'
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনেক রোগীই শুরুতে হাসপাতালের প্রতি অনাস্থা রেখে বাসা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অবস্থা খারাপ হলে তারা নিজেরাই বরিশাল বা ঢাকায় ছুটছেন উন্নত চিকিৎসার আশায়। এদের অনেকের নামও স্বাস্থ্য বিভাগের তালিকায় নেই।
এলাকাবাসীর জোরালো দাবী, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে দ্রুত আইসিইউ চালু করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা