গাজীপুরের কালীগঞ্জে গরু চুরির সন্দেহে চারজনকে গণপিটুনি দিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে ঘটনাস্থলেই এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় অপর তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম শান্ত (২০)। তিনি নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার বালুচর এলাকার মৃত জাকির হোসেনের ছেলে।
আহতদের মধ্যে রয়েছে, কালীগঞ্জের মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়হরা (বড্ডা) এলাকার মৃত হাফিজুল্লাহর ছেলে রিফাত (১৯), বক্তারপুর ইউনিয়নের ভাটিরা এলাকার মৃত ইসমাইলের ছেলে রুবেল (২৮) এবং তুমুলিয়া ইউনিয়নের বান্দাখোলা এলাকার আনিল চন্দ্রের ছেলে হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা আবদুল্লাহ (২৭)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার ভোররাতে রামচন্দ্রপুর গ্রামের শামসুদ্দিন মোল্লার গোয়ালঘরে চোরচক্র হানা দেয়। ওই সময় শামসুদ্দিন মোল্লা (৫০) পাশের ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। শব্দ পেয়ে জেগে উঠে চোরদের দেখে ফেলেন তিনি। পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ও স্থানীয়দের সহায়তায় চোরদের ধাওয়া করা হয়। এক পর্যায়ে চারজনকে ধরে ফেলে গ্রামবাসী। এরপর উত্তেজিত জনতা তাদের পিটুনি দিলে শান্ত নামে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং আটক তিনজনকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। পরে সাড়ে ৯টার দিকে তাদের প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে আহত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করেন। নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শামসুদ্দিন মোল্লা বলেন, কয়েকদিন আগে আমার একটি গরু চুরি হয়েছে। এরপর থেকে আমি নিজেই রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি। ভোরে চোররা ঢুকে পড়লে চিৎকার করে সবাইকে ডাক দিই। পরে চারজনকে ধরে গ্রামবাসী। এরপর উত্তেজিত জনতা তাদের পিটুনি দেয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা: শহিদুল ইসলাম বলেন, সাড়ে ৯টার দিকে চারজনকে হাসপাতালে আনেন পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। বাকি তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আলাউদ্দিন বলেন, গরু চুরির অভিযোগে চারজনকে ধরে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। এতে একজন মারা গেছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
বিডি প্রতিদিন/এএ