নেত্রকোনায় জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া প্রেসক্লাব মিলনায়তন হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বারসিক (বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজ) নেত্রকোনা অঞ্চল।
৩০ জন কৃষকের ওপর করা গবেষণাপত্র পাঠ করেন অনুসন্ধাসী সমীক্ষক বাসসের সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী তানভীর হায়াত খান। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো: অহিদুর রহমান কীটনাশক নিয়ে কৃষকরা কি ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েন তার ব্যাখ্যা দেন।
এতে নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহারে কৃষকদের ক্যান্সারসহ নানা ঝুঁকির তথ্য ওঠে আসে। অন্যায়ভাবে নিষিদ্ধ কীটনাশক ভিন্ন নামে বিক্রির বিষয়টিও পরিলক্ষিত হয়। গবেষণা সমীক্ষায় ৫ টি গ্রামের মোট ৩০ জন কৃষকের মধ্যে ২৩ জনকেই পাওয়া গেছে নানা রোগে আক্রান্ত। গত এক বছরে আক্রান্ত এই ২৩ জন কৃষক ৪৭০ কাঠা জমিতে ১৩৭৫০০ হাজার টাকার কীটনাশক ব্যবহার করেছেন।
মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, দুর্বলতা, বিভ্রান্তি, উচ্চরক্তচাপ, বিষন্নতা, উদ্বেগ, খাবারের অরুচি, শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়া, স্নায়ু, দুর্বলতা, ত্বকের রোগ, ঘুম কম হওয়া, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং লিভারের রোগ কিডনি সমস্যাসহ নারী পুরুষের বন্ধ্যাত্ব, প্যারালাইজড, ফুসফুসে ক্যান্সার, চোখের ছানি, পা ভারী হয়ে যাওয়া ও বুক ব্যাথা জনিত কারণে ২৩ জনের চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়েছে ১৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।
এসবের কারণ কৃষকদের অসচেতনতা, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ, বিক্রিতে মনিটরিং না থাকা, কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা না জানা, কৃষি বিভাগ, বিপনন কেন্দ্রসহ কৃষকদের মাঝে তথ্যের ঘাটতি।
এসব কারণে এগুলো নিয়ে পরিবেশবিদসহ কৃষি বিভাগ এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। অর্গানিক কৃষিচর্চা বাড়াতে সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা বাড়ানোর পরামর্শও রাখা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এসময় জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল