শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

সোনার মুদ্রার থলি

হাসান হাফিজ

সোনার মুদ্রার থলি

এক ভিখিরি। রোজকার মতো ভিক্ষে করতে বেরিয়েছে। একটা থলি কুড়িয়ে পেল সে। বাজারের রাস্তায় কে যেন সেটা ফেলে গেছে। ভিখিরি খুলে দেখে অবাক। থলির ভিতরে ১০০টি সোনার মুদ্রা। হঠাৎ শোনা গেল এক ব্যবসায়ীর চিৎকার। চেঁচিয়ে লোকটা বলছে, পুরস্কার, পুরস্কার। ভাইসব, এখানে আমার একটা থলি হারিয়ে গেছে। কেউ সেটা পেলে তাকে আমি ভালো পুরস্কার দেব।

ভিখিরি সৎ মানুষ। সে ওই লোকটার কাছে এগিয়ে গেল। বলল, ভাই এই নিন আপনার থলে। আমি রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছি এটা। এবার আমাকে আপনার ঘোষণা মতো পুরস্কার দিন।

লোকটা লোভীর মতো থলেটা নিল হাত বাড়িয়ে। চটপট মুদ্রাগুলো সে গুনল। মুখটা কালো হয়ে গেল তার। রাগী গলায় বলল, পুরস্কার? কিসের পুরস্কার? তুমি আমার সর্বনাশ করেছ। এই থলের ভিতরে ২০০ সোনার মোহর ছিল। এখন দেখতে পাচ্ছি আছে মাত্র ১০০টি। তার মানে তুমি বাকি ১০০ মোহর সরিয়ে ফেলেছ। চোর কাহাকার! জলদি ভাগো এখান থেকে। না হলে আমি পুলিশের কাছে নালিশ করতে বাধ্য হব। ব্যাটা এক নম্বর চোর।

এ কথা শুনে ভিখিরি গেল চটে। তার চোটপাটও কম নয়। লোভী মানুষ নয় বলে তার চরিত্রে তেজ আছে বেশ। হুঙ্কার ছেড়ে সে বলল, খবরদার উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না। আমি কোনো অসৎ লোক নই। চলুন কাজির দরবারে। বিহিত করার দায়িত্ব ওনার। বিজ্ঞ বিচারকই বের করবেন, কে সত্য বলছে, আর মিথ্যা বলছে কে।

কাজি মন দিয়ে শুনলেন দুজনের কথা। তাদের বললেন, আমি তোমাদের দুজনের কথাই বিশ্বাস করি। ন্যায়বিচার করা সম্ভব। এই যে ব্যবসায়ী, তুমি বলছ এই থলেতে ২০০ সোনার মুদ্রা ছিল। কিন্তু ভিখিরি যেটা কুড়িয়ে পেয়েছে, তাতে পাওয়া গেছে ১০০ মুদ্রা। সুতরাং এটি তোমার থলে হতে পারে না।

এই কথা বলে কাজি সাহেব তার বিচারকাজ শেষ করলেন। ১০০ সোনার মুদ্রাসমেত থলেটি দিয়ে দিলেন ভিখিরিকে। লোভী ব্যবসায়ী তাকিয়ে রইল হা করে।

 

(ইসরায়েলের রূপকথা অবলম্বনে)

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর