আগামী অর্থ-বছর খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী স্ট্যাগফ্লেশন (অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে যুগপৎ নিম্ন প্রবৃদ্ধি)-এর ফলে যে মন্দা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার প্রভাব আমাদের ওপরও পড়তে শুরু করেছে।
দেশবাসীকে এ বার্তাটি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যে, আগামী অর্থবছরটি খুব চ্যালেঞ্জিং। তাই সঙ্কট মোকাবিলার জন্য অর্থবছরের মাঝপথেও আমাদের নীতি-কৌশল বদলাতে হতে পারে। এমন পরিবর্তনের জন্য আমাদের সব অংশীজনকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।
শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার এক সংবাদ সম্মেলনে আতিউর রহমান এসব কথা বলেন।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারম্যান ও সাবেক এ গভর্নর বলেন, বাজেট প্রস্তাবনাটি দেখে মনে হচ্ছে আমাদের বাজেটপ্রণেতারা সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো যথার্থভাবে চিহ্নিত করে এগুলোর বিষয়ে সচেতন থেকেই বাজেট প্রস্তুত করেছেন। এ সংবেদনশীলতার বড় উদাহরণ হতে পারে জ্বালানি, সার ইত্যাদি বাবদ ভর্তুকি ও প্রণোদনায় দেওয়া বরাদ্দ বৃদ্ধি থেকে। আসন্ন অর্থ-বছরে এ বাবদ বরাদ্দ প্রায় ৮৩ হাজার কোটি টাকা। মোট হিসেবে চলতি অর্থ-বছরের চেয়ে এটি বেড়েছে। জিডিপির শতাংশ হিসেবেও আসন্ন অর্থবছরে এ বরাদ্দের অনুপাত বেড়েছে। চলতি বছরে জিডিপির শতাংশ হিসেবে ভর্তুকি ও প্রণোদনা ১.৭ শতাংশ। আসছে বছরে হচ্ছে ১.৯ শতাংশ। অথচ বিদ্যমান বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে জিডিপির শতাংশ হিসেবে চলতি বছর থেকে আসছে বছরে বাজেটের আকার ও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দুটোই কিন্তু কমাতে হয়েছে। এর মধ্যেও ভর্তুকি ও প্রণোদনার অনুপাত বৃদ্ধিকে স্বাগত জানাতেই হবে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন এ অনুপাত প্রয়োজনবোধে আরও বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, আসন্ন অর্থবছরের সামষ্টিক অর্থনৈতিক বাস্তবতাগুলো মাথায় রেখে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় কমানোরও সুযোগ রয়েছে বলে মনে হয়। যেমন- অনুন্নয়ন বা পরিচালন ব্যয় প্রস্তাবিত বাজেটে ৪ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি। এটি জিডিপির ৯ শতাংশ। তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ খাতে বা উপখাতে মূলধন ব্যয় কমিয়ে এ অনুপাত কমানো যেত। একইভাবে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে মোট বাজেটের ১২ শতাংশ যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেখানেও এখনই জরুরি নয় এমন প্রকল্পগুলোতে অর্থ কম দিয়ে বা একেবারেই না দিয়ে চাপ কমানো যেতো।
সংবাদ সম্মেলনে উন্নয়ন সমন্বয় কেন্দ্রের সদস্য জিনিয়া শারমিন, ড. জালাল উদ্দিন আহমেদ, খন্দকার সাখাওয়াত হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত