গত ২৫ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার নেমেছে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। এছাড়া বিনিয়োগের পরিমাণও এক দশকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। অন্যদিকে গত টানা তিন অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে ১০ শতাংশের আশেপাশে।
বিনিয়োগ স্থবিরতায় কর্মসংস্থান কমে গেছে সব খাতে, বাড়ছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা। কৃষি উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি এখন গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এতে খাদ্যনিরাপত্তাও শঙ্কার মধ্যে। আর্থিক খাত এখনো ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ব্যাংকের পরিস্থিতি নাজুক। বেড়েছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ।
টানা তিন বছর ধরে চলা অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার প্রভাবের পাশাপাশি গত প্রায় এক বছরের বিনিয়োগ পরিবেশের অবনতি অর্থনীতির সংকটকে বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, মব সন্ত্রাসের মতো ঘটনার কারণে বেসরকারি খাত এখনো আস্থাহীন। বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় অর্থনীতির গতি মন্থর বা শ্লথ হয়ে আছে।
যদিও এসবের বিপরীতে অর্থনীতিতে কিছু ইতিবাচক লক্ষণও আছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার উত্তরাধিকার সূত্রেই একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি পেয়েছিল। সেখান থেকে সামষ্টিক অর্থনীতির কিছু সূচক অনেকটাই সংহত হয়েছে। রিজার্ভের পতন ঠেকানো গেছে। লেনদেনের ভারসাম্যও অনেকটা ফিরে এসেছে।
অর্থনীতির কিছু সূচকে স্থিতিশীলতা এলেও এর সুফল সাধারণ মানুষের জীবনে এখনো পৌঁছেনি। কারণ, মূল্যস্ফীতি কমার হার খুবই ধীর। সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে বিনিয়োগে স্থবিরতা। এর মধ্যে আবার সরকার নিজেই সরকারি বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে।
এ রকম এক পরিস্থিতিতে নতুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হচ্ছে আজ সোমবার।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর প্রধান কারণ, কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি কমে হয়েছে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ।
দেশে সর্বশেষ এর চেয়ে কম জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরে, ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে কোভিডের এই অস্বাভাবিক অর্থবছরটি বাদ দিলে কম প্রবৃদ্ধির সময় ছিল ২০০১-০২ অর্থবছর, ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
অর্থনীতির জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হচ্ছে মোট বিনিয়োগ ও মোট দেশজ সঞ্চয়। দুটোই কমে গেছে। এবার মোট বিনিয়োগের হার হচ্ছে জিডিপির ২৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
এর আগে এর তুলনায় কম বিনিয়োগের অর্থবছর ছিল ২০১৩-১৪ অর্থবছর, ২৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর মোট দেশজ সঞ্চয় তো কমছে ধারাবাহিকভাবে।